শমীক ভট্টাচার্য।-ফাইল ছবিলিয়োনেল মেসির সফর কার্যত বিশ্ব দরবারে কলকাতার মাথা হেঁট করে দিল। শহরের বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যে বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা পড়ল, তা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে। হাজার হাজার দর্শকের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে সল্টলেক স্টেডিয়াম ও সংলগ্ন এলাকায়। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে, মাঝপথ থেকেই নিজের গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনাও করতে হয় তাঁকে। সাম্প্রতিক কালে এমন ঘটনা কলকাতায় ঘটেছে বলে অনেকেই মনে করতে পারছেন না। মেসির সঙ্গে মাঠে উপস্থিত থাকার কথা ছিল শাহরুখ খানেরও, কিন্তু তিনিও শেষ পর্যন্ত হোটেল থেকেই ফিরে যান।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ভাষায় রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। শনিবার তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টের নামে যে ভাবে টিকিট কালোবাজারি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের লাঠিচার্জ এবং বহু দর্শকের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তা রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতার নগ্ন উদাহরণ। তাঁর অভিযোগ, গোটা আয়োজনটাই কার্যত লুটের ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছিল, যার জেরে আন্তর্জাতিক স্তরে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, 'শুধু ক্ষমা চাওয়াই যথেষ্ট নয়। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আয়োজক, প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোখা যাবে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে এই ধরনের আয়োজন রাজ্যের জন্য বিপজ্জনক নজির তৈরি করছে বলেও তিনি সতর্ক করেন।'
অনেকের মতে, কলকাতার ইতিহাসে এমন কলঙ্কিত দিন সাম্প্রতিক অতীতে আসেনি। হাজার হাজার টাকা খরচ করে মেসিকে দেখার আশায় টিকিট কেটেছিলেন দর্শকেরা, কেউ দিয়েছেন ১২ হাজার, কেউ আবার ১৬ হাজার টাকা। অথচ এক ঝলকও দেখতে পাননি বিশ্বজয়ী ফুটবলারকে। ক্ষুব্ধ জনতার কণ্ঠে উঠে এসেছে প্রতারণার অভিযোগ, “আমাদের সঙ্গে বড় দুর্নীতি হয়েছে, টাকা ফেরত চাই।”