রাজ্যে 'একলা চলো'র ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও আশাবাদী। জোটের আশা ছাড়তে নারাজ। কিন্তু প্রদেশ নেতৃত্ব শুরু থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। মমতা বেঁকে বসায় সিপিএমের সঙ্গেই জোট করতে চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় শামিল হয়ে সিপিএম নেতারাও সদর্থক বার্তা দিয়েছেন বলেই মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা কি প্রদেশ নেতৃত্বের কথা কানে তুলছেন? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কারণ শুক্রবারও জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন,'মমতার উদ্দেশ্যও বিজেপিকে হারানো। মতভেদ মিটিয়ে সমঝোতা হবে।'
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুলের সঙ্গে মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে দেখা হলেও জোট নিয়ে কোনও কথা হয়নি। কারণ সেই সময় দু'জনের কাছেই ছিল না। মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎই হয়েছে। তবে এই 'সৌজন্য সাক্ষাৎ' যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী। যা জোটের পক্ষে অনুঘটক হিসেবেই দেখা উচিত বলে মনে করছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। bangla.aajtak.in-কে এক কংগ্রেস নেতা জানালেন,'হাইকম্যান্ডকে আমরা সবসময়ই সদর্থক বার্তা দিতে চাইছি। অধীরদার সঙ্গে হেঁটেছেন সেলিমদা, সুজনদা। রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যেতে আগ্রহী নন। এতে হাইকম্যান্ড বার্তা পেলে খুব ভালো কথা।'
২০২১ সালে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ জোট হয়েছিল। সংযুক্ত মোর্চা নামে সেই জোটের ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরীরা। তবে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে জোটের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। কারণ কয়েকটি আসন নিয়ে দুপক্ষই ছিল অনড়। এমনকি তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। কংগ্রেস সূত্রের খবর, ১২ থেকে ১৩টি আসন চাইতে পারেন অধীর চৌধুরী। এর মধ্যে বহরমপুর, রায়গঞ্জ ও পুরুলিয়ার মতো আসন রয়েছে। গতবার মুর্শিদাবাদ আসনটি দুপক্ষই ছাড়তে নারাজ ছিল। এবার সেটা চাইছে না প্রদেশ নেতৃত্ব। বরং নমনীয় অবস্থান নিয়ে ভোটের আগে বিষয়টি গুছিয়ে নিতে চাইছে তারা।
প্রদেশের কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন,'২০২১ সালে বামেদের সঙ্গে আমরা জোট করেছিলাম। তার আগে কোনও কারণে গত লোকসভা ভোটে হয়নি। আর ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের এখনও ঢের দেরি। এখন ন্যায় যাত্রা চলছে। সিপিএম আমাদের ইন্ডিয়া জোটের শরিক, ফলে আগামী দিনে কথাবার্তা চলতেই পারে।' এদিকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও মমতাকে নিয়ে আশা ছাড়েনি, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কথায়। তাঁর বার্তা,'ইন্ডিয়া জোটে ২৭টি দল রয়েছে। ইন্ডিয়া জোটের সবাই বিজেপিকে হারাতে চায়। মমতার উদ্দেশ্যও বিজেপিকে হারানো। এক তরফা আসন সমঝোতা হবে না। মতভেদ মিটিয়ে সমঝোতা হবে। সবাইকেই আপোস করতে হবে। আমরাও আপোস করব। স্থানীয়স্তরে মতভেদ থাকতেই পারে, জাতীয়স্তরে আমরা একজোট।'