আজ, রবিবার রাতে ৮২ মিনিট ধরে এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে গোটা ভারত। রাতের আকাশে দেখা দেবে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। যা চাঁদকে রাঙিয়ে তুলবে গাঢ় লাল আভায়। বিজ্ঞানীরা একে বলেন 'ব্লাড মুন'। এবং এই দীর্ঘস্থায়ী গ্রহণটি হবে চলতি দশকের অন্যতম বিশেষ ঘটনা।
কীভাবে হয় রক্তিম চাঁদ?
চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে এসে দাঁড়ায়। সূর্যের আলো সরাসরি চাঁদে পৌঁছতে না পেরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রান্ত ঘুরে যায়। এতে নীল ও সবুজ আলো ছড়িয়ে যায়। আর দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের লাল আভা পৌঁছে যায় চাঁদের গায়ে। এর ফলেই গ্রহণের সময় চাঁদ লালচে বা তামাটে হয়ে ওঠে।
ভারতের কোন শহরগুলোতে দেখা যাবে?
এই গ্রহণ ভারতের আকাশজুড়ে দৃশ্যমান হবে। পরিষ্কার আকাশ থাকলে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু সহ দেশের প্রায় সব প্রধান শহরের বাসিন্দারা সহজেই দেখতে পাবেন এই বিরল দৃশ্য। শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বে প্রায় সত্তর লক্ষ মানুষ উপভোগ করবেন এই ‘রক্তিম চাঁদ’। সাংহাই, টোকিও, লন্ডন, কায়রো, মস্কো, মাদ্রিদ, সিডনি, ঢাকা সহ বহু আন্তর্জাতিক শহর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাবে।
সময় ও স্থায়িত্ব
চন্দ্রগ্রহণের মূল আকর্ষণ পূর্ণগ্রাসের ৮২ মিনিট। এই সময় চাঁদ সম্পূর্ণভাবে লাল রঙের হবে। গ্রহণ সন্ধেয় শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত চলবে।
নিরাপদে দেখার সুযোগ
সূর্যগ্রহণের মতো চন্দ্রগ্রহণ দেখতে বিশেষ চশমার প্রয়োজন নেই। খালি চোখে, দূরবীন কিংবা টেলিস্কোপ দিয়েও নিরাপদে দেখা যাবে।
আলোকচিত্রীদের জন্য সোনালি সুযোগ
'ব্লাড মুন' ক্যামেরাবন্দি করতে চাইলে DSLR ব্যবহারকারীদের টেলিফটো লেন্স (২০০ মিমি বা তার বেশি) ও ট্রাইপডে ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। শাটার স্পিড, ISO (৪০০–৮০০) এবং অ্যাপারচার (এফ/৫.৬ বা বেশি) নিয়ে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা ট্রাইপড, টাইমার মোড ও নাইট মোড ব্যবহার করে ভালো ছবি তুলতে পারবেন।
কেন মিস করা উচিত নয়?
এত দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখা বিরল। প্রকৃতির এই নাটকীয় সৌন্দর্য শুধু মুগ্ধতাই দেয় না, মহাকাশে পৃথিবীর অনন্য অবস্থানের কথাও মনে করিয়ে দেয়। জ্যোতির্বিদ, শিক্ষার্থী, আলোকচিত্রী, সবার জন্যই আজকের রাত হবে স্মরণীয়।