লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশে জুলাইয় তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ডিসেম্বর থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য পড়ে আবেদন নিয়ে কাজ শুরু করবে সরকার। তিনি বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী ও রুপোশ্রী প্রকল্পের জন্য আমরা ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বাংলার বাড়ি, বিধবা ভাতা আরও দেওয়া হবে ডিসেম্বর থেকে। আমাদের কাছে যে লিস্ট আছে সেটা নিয়ে কাজ হবে। ২ কোটি ১৫ লক্ষ মহিলাকে ৪০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে দিয়েছি। মানবিক ভাতা, বার্ধক্য ভাতা প্রায় ২৯ লক্ষ মানুষকে দিয়েছি। স্বাস্থ্যসাথীতে ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছি বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও হাসপাতালে সরকারি তরফে প্রচুর সাহায্য করি আমরা।'
বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও আজ বড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কোনও অসহায় মানুষ এ দেশে শরণার্থী হতে চাইলে রাজ্য সরকার আশ্রয় দেবে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এই বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রী বোঝাতে চাইলেন,বাংলাদেশে নির্যাতিত মানুষ আশ্রয় চাইলে রাজ্য সরকারের দরজা খোলা।
সরকারি চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ। পড়ুয়া, পুলিশ ও শাসক দলের সদস্যদের খণ্ডযুদ্ধ। গোটা দেশের বহু জায়গায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। পরিস্থিতি সামলাতে রাস্তায় নেমেছে সেনা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না মমতা। তবে বাংলাদেশে কেউ অত্যাচারিত হলে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেবে রাজ্য। রবিবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এ কথা জানালেন তৃণমূল নেত্রী।
মমতা এ দিন বলেন,'আমি বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলতে পারি না। কারণ ওটা একটা আলাদা দেশ। যা বলার ভারত সরকার বলবে। এটুকু বলতে পারি, অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজা খটখটানি করলে আমরা নিশ্চিত আশ্রয় দেব। তার কারণ এটা রাষ্ট্রসঙ্ঘের একটা প্রস্তাব রয়েছে। কেউ শরণার্থী হলে তাঁকে পার্শ্ববর্তী এলাকা সম্মান জানাবে'। অসমে বোড়ো সংঘর্ষের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা। তিনি জানান,'অসমে বোড়োদের একটা গণ্ডগোল হয়েছিল। আলিপুরদুয়ারে তাঁরা দীর্ঘদিন আশ্রয় নিয়েছিলেন। আমি গিয়ে দেখা করে এসেছিলাম'। তবে বাংলাদেশ নিয়ে এ দেশে কোনও অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নেত্রী। তাঁর সতর্কবার্তা,'আপনাদের কাছে আবেদন থাকবে, বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যেন কোনও প্ররোচনাতে না যাই। আমরা যেন কোনও উত্তেজনা তৈরি না করি। আমাদের সহমর্মিতা তাঁদের জন্য আছে। ছাত্রছাত্রীদের তাজা প্রাণ চলে যাচ্ছে'।