scorecardresearch
 

TMC Shahid Diwas 2023: কংগ্রেস 'বাদ', মমতার নিশানায় শুধুই BJP, লোকসভার লক্ষ্যেই বার্তা মমতার?

বেঙ্গালুরুর বিরোধী বৈঠকে কংগ্রেসের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সখ্যের ছবি দেশবাসী দেখেছে, মমতা সেই সম্পর্কে আর চিড় ধরাতে চাইছেন না। বরং বার্তা মিলল, লোকসভায় বিরোধী জোটে কংগ্রেসে পাশে নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনস্থির করে ফেলেছেন মমতা।

Advertisement
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হাইলাইটস
  • ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী
  • উল্লেখযোগ্য ভাবে আজ মমতার আক্রমণের নিশানাতে ছিল না কংগ্রেস

পঞ্চায়েত ভোটের আগের সুর ও INDIA জোট গঠনের পরবর্তী সুর মিলল না। ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মণিপুর হিংসা, পঞ্চায়েত হিংসা, ১০০ দিনের কাজের টাকা-সহ একাধিক ইস্যুতে তিনি বিজেপিতেই বিঁধেছেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে আজ মমতার আক্রমণের নিশানাতে ছিল না কংগ্রেস। বামেদের নামও মাত্র এক বা দুবার শোনা গিয়েছে।

যদিও পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিয়মিত তিনি বাম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছেন। যদিও আজ পুরো ভাষণজুড়ে বিজেপি-কেই টার্গেট করলেন তিনি। যার নির্যাস, লোকসভা ভোটে বিরোধী ঐক্যের তান বেঁধে দেওয়ার বার্তাই মিলল মমতার গলায়।

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আসলে ২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিরোধী দলগুলির জোটবদ্ধ হওয়ার সুক্ষ পরিকল্পনাতেই মমতার আক্রমণের নিশানা থেকে বাদ গিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। বেঙ্গালুরুর বিরোধী বৈঠকে কংগ্রেসের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সখ্যের ছবি দেশবাসী দেখেছে, মমতা সেই সম্পর্কে আর চিড় ধরাতে চাইছেন না। বরং বার্তা মিলল, লোকসভায় বিরোধী জোটে কংগ্রেসে পাশে নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনস্থির করে ফেলেছেন মমতা।

আরও পড়ুন

মমতার আজকের বক্তব্যে সেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তিনি যে ২৬টি বিরোধী দলের জোট INDIA নিয়ে খুবই আগ্রহী, সেটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ২৬টি দলের মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস। এছাড়াও রয়েছে সিপিএম, সিপিআই-সহ একাধিক বাাম দল। বিহারের পাটনা ও কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে লোকসভা নির্বাচনে একযোগে লড়াই করার জন্য বৈঠক বসেছিল এই দলগুলি। 

এদিন, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তিনি ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বলেন, 'আজকে আমি খুশি, ২৪-এর আগে আমরা একটা INDIA নামে জোট তৈরি করেছি। আমরা চেয়ারকে কেয়ার করি না। আমরা চাই, বিজেপি কেন্দ্র থেকে বিদায় নিক। বিজেপিকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। ২০২৪ সালে বিজেপি হারবে, INDIA জিতবে।' এই 'INDIA জিতবে' কথাটি বারংবার শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীর ভাষণে। দুপুর দেড়টা নাগাদ সভামঞ্চে বক্তৃতা করতে ওঠেন তৃণমূল নেত্রী। এরপর প্রথমেই মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি।

Advertisement

বলেন, 'কোথায় গেল বেটি বাঁচাও স্লোগান? দেশের বেটিরা এখন জ্বলছে। ২০২৪ সালে নতুন ইন্ডিয়া-র জন্ম হবে। বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেবে সাধারণ মানুষ। মণিপুরের মহিলাদের যে ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের লজ্জা করা উচিত।' তিনি আরও বলেন, 'বিলকিস বানুর অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের ইজ্জত লুঠ করছে। শুনে রাখো, মহিলাদের ইজ্জত নিলে আগামী ভোটে মহিলারাই আপনাদের উপড়ে ফেলে দেবে।'

প্রায় ঘণ্টা খানেকের বেশি সময় ধরে চলা ভাষণের বেশি সময়ই কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে নিশানা করেছেন মমতা। কেন্দ্রের এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে তিনি INDIA-কেও তুলে ধরেছেন। মণিপুর নিয়েও এই জোট যে কর্মসূচি নিচ্ছে সেটাও এদিন জানিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জানিয়ে দেন, 'আমরা মুখ্যমন্ত্রীদের একটা দল মণিপুরে যেতে চাই। আমার সঙ্গে অরবিন্দ কেজরিওয়ালেরও কথা হয়েছি। আমরা মুখ্যমন্ত্রীদের একটা দল মণিপুরে যেতে চাই। পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে চাই।'

তবে, এই পশ্চিমবঙ্গে INDIA জোট বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয় বলেই জোটের দুই অংশগ্রহণকারী দল কংগ্রেস ও সিপিএম-র একাংশ দাবি করেছে। রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতা মেনেই এখানে এই জোট গড়া সম্ভব হবে না বলে তারা মনে করছে। খোদ সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, তাঁদের লড়াই কংগ্রেস, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কোনও প্রশ্নই নেই। তিনি আরও বলেন, বিজেপি বিরোধী জোটের সদস্যদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমানোর চেষ্টা করবেন।

গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী ঘোষণা করেছিলেন, কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি যৌথভাবে বাংলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়বে। যদিও বেঙ্গালুরুর বৈঠকের পর প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে অফিশিয়ালি কোনও বক্তব্য সামনে আসেনি। তবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশ যে জোট নিয়ে ক্ষুব্ধ তা পরিষ্কার। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি, সুমন রায় চৌধুরীর মতো নেতারা রাকঢাক না রেখেই জানিয়ে দিয়েছেন যে এই জোটের বিরুদ্ধে তাঁরা।

Advertisement