ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পথে তিনি জানালেন, ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাদ বাকি যা করার করবে প্রশাসন। যারা টাকা পাননি তাদের দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মমতার বার্তা,এটা প্রশাসনের কাজ। সাংবাদ মাধ্যমের সালিশির (মিডিয়া ট্রায়াল) ব্যাপার নয়।
পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা ঢুকেছে অন্য অ্যাকাউন্টে। বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে এই অভিযোগ। সেই সব অভিযোগের তদন্তের জন্য এবার বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করেছে লালবাজার। ওই দলে রয়েছেন ১০ জন সদস্য। শুধু জেলা নয়, কলকাতার বিভিন্ন থানাতেও দায়ের হয়েছে ১০টি অভিযোগ। এনিয়ে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়ে বলে মনে করিয়ে দেন মমতা। বলেন, 'মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানেও হাইজ্যাক করেছে। এই দলটাকে আমরাই ধরতে পেরেছি। আমাদের প্রশাসন খুব স্ট্রং, রাফ অ্যান্ড টাফ। ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। বাদ বাকি যা করার করবে। ট্যাবের টাকা যারা পায়নি, তাদের দিয়ে দেওয়া হবে'।
ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনোর সুবিধার্থে একাদশ ও দ্বাদশ পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের আওতায় ট্যাব কেনার জন্য মেলে এককালীন ১০ হাজার টাকা। সেই টাকাই গায়েব হয়ে গিয়েছে! বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। জেলায় জেলায় উঠেছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। এ পর্যন্ত যা খবর, সব জেলা মিলিয়ে ৩০০ পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি ১০ হাজার টাকা। যা 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পে দিয়েছিল সরকার। ফলে টাকার অঙ্কেও এটা বিরাট দুর্নীতি!
ট্যাব কেলেঙ্কারির শিকড়ে পৌঁছতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত। মোট ৫৬টি এফআইআর দায়ের করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সরকারি টাকা হাতানোর অভিযোগে ৪ জনকে পাকড়াও করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে ২ জনকে। সরশুনায় ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থেকে খবর গিয়েছিল ইসলামপুর থানায়। তারপর গ্রেফতার করা হয় দুই অভিযুক্তকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরের পোর্টালে ঢুকে গরিমল করেছে অভিযুক্তরা। যা শুধু জেলার স্কুলগুলিতেই আটকে নেই। ট্যাবের টাকা গায়েবের অভিযোগ দায়ের হয়েছে যাদবপুর, কসবা, বেনিয়াপুকুর, মানিকতলা, ওয়াটগঞ্জ, সরশুনা, জোড়াসাঁকো, গল্ফগ্রিন এবং ভবানীপুর থানায়।