নিজস্ব চিত্র SIR নিয়ে ফের একবার সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে একের পর এক ব্যক্তি SIR-এর ভয়ে, NRC-র আতঙ্কে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, আর এর জন্য দায়ী। এমনটাই বক্তব্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর।
BJP ভয়ের রাজনীতি শুরু করেছে বলে শুক্রবার দুপুরে এক্স পোস্ট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, 'BJP-র ভয়-ঘৃণা এবং বিভাজনের রাজনীতির ভয়ঙ্কর পরিণামের সাক্ষী হচ্ছি আমরা। নির্বাচন কমিশন বাংলায় SIR ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে, BJP-র বুলডোজার রাজনীতির একটি মহড়া দেখছি আমরা। একটার পর একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে চলেছে। অথচ এগুলি এড়ানো সম্ভব ছিল।'
ঘটনাগুলি পর পর তুলে ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৭ অক্টোবর, ৫৭ বছর বয়সী পানিহাটি, খড়দার বাসিন্দা প্রদীপ কর আত্মঘাতী হন। 'আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী' বলে সুইসাইড নোট লিখে রেখে গিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ২৮ অক্টোবর, ৬৩ বছরের দিনহাটা, কোচবিহারের এক বাসিন্দা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি। SIR প্রক্রিয়ার জন্য আতঙ্ক তৈরি হয় তাঁর মনে। এরপর বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতওয়ালির ৯৫ বছর বয়সী ক্ষিতিশ মজুমদারও SIR প্রক্রিয়ার আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করলেন মমতা। জানা গিয়েছে, বীরভূমের ইলমবাজারে দুই মেয়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। ভিটেমাটি ছাড়া হওয়ার আতঙ্কেই তিনি গলায় দড়ি দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
মমতার প্রশ্ন, 'রাজনীতি প্ররোচিত এই মৃত্যুগুলির দায় কে নেবে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায় নেবেন? BJP এবং তার সহযোগী দলগুলি দায় নেবে? ওদের জন্যই এই ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সাহস থাকলে উত্তর দাও। ৯৫ বছরের ওই ব্যক্তি, যিনি নিজের ভিটেতে গোটা জীবন কাটিয়েছেন, তাঁকে নিজের পরিচয় প্রমাণ করানোর আতঙ্কে প্রাণত্যাগ করতে হল। দেশের বিবেকে আঘাত এটা। শুধুমাত্র মর্মান্তিক ঘটনাই নয়, মানবিকতার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।' মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'বংশপরম্পরায় বাংলার মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বেঁচেছেন। আজ প্রমাণ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, আদৌ তাঁরা এ রাজ্যের নাগরিক কি না। এটা নিষ্ঠুরতা, অমানবিক এবং কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।'
রাজ্যের মানুষের কাছে বিশেষ আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সকলের কাছে অনুরোধ করছি, উস্কানিতে পা দেবেন না। ভরসা হারাবেন না। চরম কোনও পদক্ষেপ নেবেন না। মা মাটি মানুষ আপনার পাশে রয়েছে। বাংলায় NRC হতে দেব না। সামনের দরজা দিয়েও না, পিছনের দরজা দিয়েও নয়। একজন নাগরিককেও বহিরাগত তকমা পেতে দেব না। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করব যাতে মানুষের অধিকার খর্ব না হয়। যাতে BJP এবং তার সহযোগী দলগুলির সামাজিক কাঠামো ভেঙে ফেলার ঘৃণ্য অ্যাজেন্ডা পূরণ না হয়।'