scorecardresearch
 

Mamata Banerjee: ৪০০ কোটি টাকা ভাড়া বাকি, ৩ হাজার বিপজ্জনক বাড়ি, কীভাবে অধিগ্রহণ? প্রশ্ন বাড়িওয়ালাদের

বর্ষার মরসুমে প্রতি বছরই কলকাতা শহরে একাধিক জীর্ণ বাড়ি ভেঙে পড়ে। অভিযোগ, কলকাতা পুরসভা এই ধরনের বাড়ির গায়ে ‘বিপজ্জনক’ নোটিস ঝুলিয়ে দেয় বটে, কিন্তু সংস্কারের কাজ প্রায় হয়ই না। তার জন্য বাড়ির মালিকের সঙ্গে ভাড়াটেদের দ্বন্দ্বকেই প্রধান কারণ হিসাবে অধিকাংশ সময়ে চিহ্নিত করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অতীতে বার বার পুরসভার বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে বাড়িমালিকদের একটি সংগঠন।

Advertisement
কলকাতার বিপজ্জনক বাড়ি। গ্রাফিক্স: শুভঙ্কর মিত্র কলকাতার বিপজ্জনক বাড়ি। গ্রাফিক্স: শুভঙ্কর মিত্র
হাইলাইটস
  • বর্ষার মরসুমে প্রতি বছরই কলকাতা শহরে একাধিক জীর্ণ বাড়ি ভেঙে পড়ে।
  • অভিযোগ, কলকাতা পুরসভা এই ধরনের বাড়ির গায়ে ‘বিপজ্জনক’ নোটিস ঝুলিয়ে দেয় বটে, কিন্তু সংস্কারের কাজ প্রায় হয়ই না।

বৃহস্পতিবার শহরের বিপজ্জনক বাড়ি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুরোনো বাড়িগুলিতে সাধারণত বহু ভাড়াটে থাকেন। তাঁদেরই মালিককে বলতে হবে, বাড়ি সংস্কারের কাজে হাত দেওয়ার জন্য। বিষয়টিতে কলকাতার পুরোনো বাড়িওয়ালাদের অভিযোগ, যেসব বাড়িতে পুরসভা 'বিপজ্জনক বাড়ি'র বোর্ড লাগিয়েছে, সেইসব বাড়ির নীচের দোকানের ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছে পুরসভা। অনেক বাড়িতে পার্টি অফিস পর্যন্ত চলছে বহাল তবিয়তে। আসলে এই সমস্যা মেটানোর সদিচ্ছা পুরসভার নেই। রাজ্য সরকার সঠিক দাম দিয়ে যদি বাড়িগুলো কিনে নেন, তাহলে সমস্যা মিটবে, কিন্তু তা করার সদিচ্ছা সরকারের রয়েছে কী না, তাতে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। 

কলকাতার বাড়িওয়ালাদের অভিযোগ, বাড়িভাড়ার টাকা পান না তাঁরা। বাড়িভাড়া আইনের বিধান অনুযায়ী, রেন্ট কন্ট্রোলে জমা পড়া ভাড়ার টাকা তিন মাস অন্তর বাড়ির মালিকের হাতে ফেরত আসার কথা। কিন্তু শুধু মূল কলকাতার একশোটি ওয়ার্ড এলাকার ক'য়েক হাজার বাড়ির মালিক বাগবাজারের সুকুমার রক্ষিত, বলরাম মল্লিক স্ট্রিটের সুবল বসাক, শ্যামবাজারের একদা বাসিন্দা প্রাক্তন মেয়র গোবিন্দ দে’র পরিবারের মতো বছরের পর বছর ভাড়ার টাকা চোখে দেখেন না। ভাড়া বাবদ তাঁদের পাওনা অফিস পাড়ায় কিরণশঙ্কর রায় রোডে রেন্ট কন্ট্রোলারের অফিসে জমা হয়। জমা হতে টাকার অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি, দাবি সুকুমারবাবুদের। তিনি নিজে বাড়িওয়ালাদের একটি সংগঠনের নেতা। জানালেন, কলকাতায় ভাড়াটিয়ার দখলে থাকা তাঁর দুটি বাড়ির বাজার মূল্য প্রায় তিনশো কোটি টাকা।

১৯৯৭ সালের বাড়িভাড়া আইনে বলা হয়েছে, ভাড়ার অঙ্ক নিয়ে বিবাদের জেরে বাড়িওয়ালা ভাড়া নিতে অস্বীকার করলে ভাড়াটিয়া তা রেন্ট কন্ট্রোলারের অফিসে জমা করতে পারবে। এছাড়া, অন্য কোনও বিবাদ হলে রেন্ট্র কন্ট্রোলারের অফিসেই মামলা করতে পারেন কলকাতার বাড়ির মালিকেরা। মালিক সংগঠনগুলির দাবি, নামমাত্র ভাড়ায় বছরের পর বছর থাকার উদ্দেশে ভাড়াটিয়াদের অনেকেই মামলা ঠুকে দিয়ে রেন্ট্র কন্ট্রোলারের অফিসে ভাড়ার টাকা জমা করছে। বাড়তে বাড়তে মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার।

আরও পড়ুন

Advertisement

বর্ষার মরসুমে প্রতি বছরই কলকাতা শহরে একাধিক জীর্ণ বাড়ি ভেঙে পড়ে। অভিযোগ, কলকাতা পুরসভা এই ধরনের বাড়ির গায়ে ‘বিপজ্জনক’ নোটিস ঝুলিয়ে দেয় বটে, কিন্তু সংস্কারের কাজ প্রায় হয়ই না। তার জন্য বাড়ির মালিকের সঙ্গে ভাড়াটেদের দ্বন্দ্বকেই প্রধান কারণ হিসাবে অধিকাংশ সময়ে চিহ্নিত করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অতীতে বার বার পুরসভার বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে বাড়িমালিকদের একটি সংগঠন।

‘ক্যালকাটা হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার রক্ষিত বলেন, 'কলকাতা পুরসভা এলাকায় এই মুহূর্তে তিন হাজারেরও বেশি অতি বিপজ্জনক বাড়ি এবং ছ'হাজার বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে উত্তর কলকাতায় বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা বেশি। অথচ, সেই সব বাড়িতেই বছরের পর বছর বসবাস করে যাচ্ছেন ভাড়াটেরা। উত্তর কলকাতার বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক বাড়ির ভাড়াটেরা জানাচ্ছেন, বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকার কারণেই বিপজ্জনক জেনেও সেই বাড়ি ছেড়ে সরতে চান না তাঁরা। থানা এবং কাউন্সিলরদের অত্যাচারে আমরা সংস্কারও করতে পারছি না।'

 

Advertisement