যুবভারতীর পরিস্থিতি।-ফাইল ছবিযুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির উপস্থিতিকে ঘিরে যে চরম বিশৃঙ্খলার ছবি সামনে এসেছে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এই ঘটনাকে 'মমতার রাজত্বের চূড়ান্ত নৈরাজ্য' বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর দাবি, প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্যই হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী প্রিয় তারকাকে চোখের সামনে দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ যুবভারতীতে পৌঁছন লিওনেল মেসি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ় এবং রদ্রিগো ডি’পল। স্টেডিয়ামের গ্যালারি তখন কানায় কানায় ভর্তি। বহু দর্শক মোটা টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন শুধুমাত্র এক ঝলক মেসিকে দেখার আশায়। কিন্তু মাঠে ঢুকেই দেখা যায়, মন্ত্রী, কর্তা ও আয়োজকদের ঘিরে কার্যত আটকে পড়েন আর্জেন্টিনার তারকা। মেসিকে ঘিরে এত মানুষের ভিড় জমে যায় যে, তিনি ঠিকভাবে হাঁটতেই পারছিলেন না।
গ্যালারি থেকে দর্শকরা মেসিকে দেখতে পাননি। জায়ান্ট স্ক্রিনই ছিল একমাত্র ভরসা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও প্রধান আয়োজক মাইকে ঘোষণা করলেও তাতে কাজ হয়নি। মাত্র ১৬-১৭ মিনিট মাঠে থাকার পর মেসিকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শাহরুখ খান বা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় স্টেডিয়ামে পৌঁছোননি।
মেসি মাঠ ছাড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে দর্শকরা। গ্যালারির চেয়ার ভেঙে মাঠে ছোড়া হয়, বোতল উড়তে থাকে। ফেন্সিং ভেঙে শয়ে শয়ে মানুষ মাঠে ঢুকে পড়েন। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়। পরে লাঠিচার্জ, র্যাফ নামানো ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। ততক্ষণে যুবভারতী কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
ফুটবলপ্রেমীদের অভিযোগ, কয়েকজন নেতা-মন্ত্রীর আত্মপ্রচার এবং সম্পূর্ণ পরিকল্পনাহীনতার কারণেই এই বিপর্যয়। তাঁদের মতে, ফাঁকা মাঠে সামান্য সময় মেসিকে ঘোরালেই সবাই দেখতে পেতেন। কিন্তু সাধারণ দর্শকদের উপেক্ষা করে তারকাকে ঘিরে রাখার ফলেই কলকাতাকে এমন লজ্জাজনক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে।