মুর্শিদাবাদে রামনবমীর মিছিলে অশান্তি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর অভিযোগ এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। গতকাল বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এলাকায় বোমাবাজি এবং দোকান ভাঙচুর চলে। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিস। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মীও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত আছে। পরিকল্পনামাফিক সংখ্যালঘুদের দোষারোপ করা হচ্ছে। বাংলায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। মমতার কথায়, 'আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, পরশু দিনের ঘটনা কারা ঘটিয়েছিল? বিজেপি। তারপরের দিনের ঘটনা কারা ঘটাল? আমি চ্যালেঞ্জ করছি সেটাও বিজেপি। হামলাও ওরা করেছে। বিজেপির বিধায়ক দলবল নিয়ে গেছে রামনবমীর মিছিলে। অস্ত্র নিয়ে মিছিলে গিয়ে আপনাকে কে আক্রমণ করতে বলেছে? কে অধিকার দিয়েছে ?মা দুর্গা অধিকার দিয়েছিল, ওষুধ বধ করার জন্য। আপনাদের মতো অশুভ শক্তিকে বিনাস করার জন্য। রাম তো মা দুর্গাকে চোখ দিয়েছিল। আর আপনারা মানুষের চোখ তুলে নিচ্ছেন।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও দাবি করেন, এই ঘটনায় ১৯ জন আহত হয়েছেন। ওসি আক্রান্ত হয়েছেন। আমার কাছে ছবি আছে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটা সম্প্রদায়ের লোকেদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কথায়, 'আমি কমিশনকে জিজ্ঞেস করতেই পারি রামনবমীর আগের দিন কেন ডিআইডিকে সরানো হল মুর্শিদাবাদ থেকে। এই ঘটনার পরিকল্পনা করতে? মিলিটারি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করাতে? ওসি থেকে শুরু করে একটা কমিউনিটির উপর আক্রমণ করা হয়েছে। অথচ দেখানো হচ্ছে, একটা কমিউনিটি আক্রমণ করেছে। এটা কেন হবে?'
প্রসঙ্গত, রামনবমীর মিছিলে দুষ্কৃতী হামলাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর ও পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা। বুধবার বিকেল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই দুই এলাকা। অভিযোগ, শোভাযাত্রাটি যখন শক্তিপুর হাইস্কুল মোড়ের কাছাকাছি পৌঁছোয়, সেই সময় কিছু দুষ্কৃতী হঠাৎই মিছিলে অংশগ্রহণকারীদেরকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বেধে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রামনবমী উপলক্ষে এই মিছিলের সামনে ও পেছনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও দুষ্কৃতীরা ঢিল পাথর ছোঁড়া থেকে বিরত হয়নি। এরপর পুলিশ লাঠি চালিয়ে দু"পক্ষকে সরানোর চেষ্টা করলে হঠাৎই এলাকাতে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও বেশ কয়েকটি বোমা ছোঁড়া হয়েছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।