মুর্শিদাবাদে সংঘটিত হিংসার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। হিংসার পর মুর্শিদাবাদ ছাড়ার যে ঘটনা ঘটছে, সে সম্পর্কে তিনি এটিকে স্বাভাবিক বলে বর্ণনা করেছেন। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন যে বর্তমানে রাজ্যে এমন কোনও পরিস্থিতি নেই যা উদ্বেগজনক। মানুষ বাংলা থেকে বাংলাতেই যাচ্ছে। রাজ্যের মধ্যেই মানুষ রয়েছেন। বাংলা নিরাপদ, তাই রাজ্যের ভেতরেই মানুষ স্থানাস্তরিক হচ্ছেন । ডিজিপি একটি সংবাদিক সম্মেলনও করেছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে এবং এটি নিয়ে কোনও হট্টগোল করা উচিত নয়। এর চেয়েও অনেক বড় ঘটনা গুজরাতে ঘটেছিল। তার পরেও মানুষ চুপ ছিল। আজ কি হলো? তবে, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা নিন্দনীয়। এই ঘটনাটি ঘটা উচিত হয়নি। এই ঘটনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করা হবে। এটি বাংলার পবিত্র ভূমি।
#WATCH | Kolkata | On Murshidabad exodus, TMC leader and West Bengal Minister Firhad Hakim says, "They are migrating within Bengal only... Everything is alright... The situation happened, it happened... Though it is condemnable and police will uncover who was behind it..." pic.twitter.com/4KH5A5hLmv
— ANI (@ANI) April 14, 2025
উল্লেখ্য শুক্রবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে প্রথমে হিংসা শুরু হয়েছিল। এরপর জঙ্গিপুর থেকে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুরু করে। এদিকে সুতি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সামসেরগঞ্জ থেকেও অশান্তির খবর এসেছে। তবে, পুলিশ বাহিনী সুতির জাতীয় সড়ক থেকে ভিড় অপসারণে ব্যস্ত ছিল। পুলিশ সামসেরগঞ্জে পৌঁছাতে পারেনি এবং সেখানে হিংসা অব্যাহত ছিল। এমন পরিস্থিতিতে, কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফকে নামতে হয়েছিল, ততক্ষণে বিশাল ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল।
দুপুরে শুরু হওয়া হিংসা গভীর রাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। মালদা এবং বহরমপুর থেকে বাহিনী এসে এই এলাকায় পৌঁছালে, হিংসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিল। জনতা প্রথমে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ যখন তাদের সরিয়ে দিতে শুরু করে, তখন পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। পুলিশ আবার কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। লাঠিচার্জ করা হয়েছিল। দু'দিন আগেও মুর্শিদাবাদ পুলিশের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি এনআরসি চলাকালীন সময়েও মুর্শিদাবাদে প্রচণ্ড হিংসা দেখা গিয়েছিল।
আসলে, মুর্শিদাবাদে শুক্রবারের নমাজের পর, হাজার হাজার মানুষ ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ যখন জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে, তখন পুলিশের সঙ্গে এক ধরণের যুদ্ধ শুরু হয়। এই সময়ে, মুর্শিদাবাদ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সামসের গঞ্জে জাতীয় সড়কে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল।
এই বিষয়ে শান্তির বার্তা দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমি সবাইকে বলব রাজনীতির উর্ধ্বে উঠতে হবে। নিশ্চিতভাবে মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যায় হয়েছে। মানুষের সেবায় ব্রত হওয়া উচিত। এখানে রাজনীতি করা ঠিক নয়। মানুষের পাশেই মানুষের দাঁড়ানো উচিত। মানব ধর্ম তাই বলে।” এরপরই তিনি বলেন, “যাঁরা অপরাধী তাঁরা অপরাধী। তাঁদের কাছে কোনও রাজনৈতিক রং নেই।”