Ilish Mach in Kolkata: পুজোয় পদ্মার ইলিশের মেলার চান্স কম, বাংলার ভরসা এখন গুজরাত?

গত পাঁচ দিন ধরে, আরব সাগর থেকে গুজরাতের নর্মদা মোহনায় ধরা পড়া ইলিশ ট্রাকে বোঝাই করে কলকাতায় আসছে। জানা যাচ্ছে, গুজরাত থেকে প্রতিদিন প্রায় পাঁচটি ট্রাক, ৬০ টন ইলিশ বহন করে, বাংলায় পৌঁছচ্ছে। বলা যেতে পারে কিছুটা বাধ্য হয়েই, মায়ানমারের ইরাবতী এবং গুজরাতের নর্মদা থেকে আসা ইলিশের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে ভোজন রসিক বাঙালিকে।

Advertisement
 পুজোয় পদ্মার ইলিশের মেলার চান্স কম, বাংলার ভরসা এখন গুজরাত?কলকাতার ভরসা এখন নর্মদা-ইরাবতীর ইলিশ

বর্ষাকাল মানেই ইলিশের  মরশুম। এই সময়ই রুপোলি শষ্যের স্বাদ সবথেকে বেশি হয়। বাইরে ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে পাতে যদি পড়ে ইলিশের হরেকরকম পদ, তবে আর কী চাই। তবে এই বছর সেই ভাবে রুপোলি শস্যের দেখা নেই। যার ফলে মন খারাপ ভোজন রসিকদের। যদিও দিঘায় ইলিশ উঠছে তবে তা সারা বাংলার চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম। এদিকে পদ্মার ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনাও এবার কম। সব আশায় জল ঢেলে বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন এবার ভারতে ইলিশ রফতানির কোনও পরিকল্পনা নেই। এই আবহে গুজরাতি ইলিশের দিকেই অনেকটাই নির্ভর করতে হচ্ছে রাজ্যকে।  

গত পাঁচ দিন ধরে, আরব সাগর থেকে গুজরাতের নর্মদা মোহনায় ধরা পড়া ইলিশ ট্রাকে বোঝাই করে কলকাতায় আসছে। জানা যাচ্ছে, গুজরাত থেকে প্রতিদিন প্রায় পাঁচটি ট্রাক, ৬০ টন ইলিশ বহন করে, বাংলায় পৌঁছচ্ছে। বলা যেতে পারে কিছুটা বাধ্য হয়েই, মায়ানমারের ইরাবতী এবং গুজরাতের নর্মদা থেকে আসা ইলিশের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে ভোজন রসিক বাঙালিকে। বলাই বাহুল্য বাংলাদেশের পদ্মা বা কোলাঘাটের রূপনারায়ণ থেকে প্রাপ্ত ইলিশের তুলনায় এই মাছ অনেকটাই  নিম্নমানের।

সূত্রের খবর এবছর বাংলায় ইলিশের পর্যাপ্ত পরিমাণে যোগান ধরে রাখতে পারেনি রাজ্য। যার ফলে এই বছর পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের জোগান বাড়াতে নির্ভর করতে হচ্ছে ভিন রাজ্যের উপরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের  নর্মদা নদীতে পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ মাছ। সেখান থেকেই রাজ্যে ইলিশ আমদানি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মৎস্য দফতরের একটি সূত্র। গুজরাক থেকে আসা ডিমওলা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৯০০-১০০০ টাকায়। আর ডিম ছাড়া ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৪০০ টাকায়। এছাড়া মায়ানমার থেকেও হিমায়িত ইলিশ বাজারে আসতে শুরু করেছে। স্থানীয় আড়তদাররা এগুলো কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ করছেন। সেখানকার ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। 

Advertisement

হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের সভাপতি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদের বক্তব্য, মায়ানমার থেকে ইতিমধ্যেই ৬২৫ টন মাছ স্টোরেজ করা হয়েছে। এছাড়া ডায়মন্ড হারবার ও দিঘা থেকে স্থানীয় ইলিশও বাজারে উঠতে শুরু করেছে। যেগুলোর প্রতিটি ৪৫০-৫০০ গ্রাম ওজনের। এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। আর ১ কেজি ওজনের ইলিশ কেজি প্রতি ১৮০০ টাকায়।

গত কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপুজোর আগে বাংলাদেশের পদ্মা থেকে ইলিশ কলকাতায় আসছিল। তবে সেগুলোর দাম একটু চড়া। পদ্মার ইলিশ কলকাতার বাজারে কেজি প্রতি ১৮০০-২২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বেশি সত্ত্বেও কলকাতার ইলিশপ্রেমীদের কাছে পদ্মার ইলিশের প্রতিই আগ্রহ বেশি। কেননা সাগরের ইলিশের তুলনায় নদীর ইলিশ বেশি সুস্বাদু। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার  কারণে এ বছর পদ্মার ইলিশের আমদানি নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফলে এবার আগে থেকেই বিকল্প স্থান থেকে ইলিশ সংগ্রহ শুরু করেছেন কলকাতার মাছ ব্যবসায়ীরা। মৎস্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রায় প্রতি দিনই বাংলার চাহিদা মেটাতে মায়ানমার এবং গুজরাত থেকে ইলিশ আসছে। রাজ্যের  মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীও বলছেন, আমরা চাই এপার বাংলার প্রতিটি মানুষই যেন ইলিশের স্বাদ পায়। আর যেন তা হয় সঠিক মূল্যের মধ্যেই। তাই আমাদের নিজস্ব নদীগুলির উপর নজর রাখছি। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য রাজ্য এবং আন্তর্জাতিক বাজার থেকেও ইলিশ আমদানি করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, দেশের মধ্যে গুজরাতের নর্মদায় বেশ ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। তাই এবার বঙ্গে ইলিশের চাহিদা মেটাবার জন্য সেখান থেকেই ইলিশ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু গুজরাত থেকে যে ইলিশ আসছে সেটা নোনা জলের। ফলে যে রাজকীয় স্বাদ আছে বাংলার ইলিশের সেটার ধারেকাছেও আসছে না এই মাছ।
 

POST A COMMENT
Advertisement