২৩শে সেপ্টেম্বর ভোর থেকে মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে ১৮০ মিমি বৃষ্টিপাত এবং ২৪ ঘণ্টায় মোট ২৫১.৪ মিমি বৃষ্টিতে অচল হয়ে যায় কলকাতা। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এটি ছিল ৩৯ বছরের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি এবং শহরের ইতিহাসে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিপাত। কিছু এলাকায় এমনকি ৩৩২ মিমি পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটি মেঘ ভাঙার ঘটনা নয়। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD)-এর হাবিবুর রহমান বিশ্বাস স্পষ্ট করেছেন, প্রকৃতপক্ষে বাতাস ও আর্দ্রতার অস্বাভাবিক সংঘর্ষের ফলেই এত প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাধারণত মেঘ ভাঙনের সময় মেঘের উচ্চতা থাকে ৪-৬ কিমি, অথচ এই ক্ষেত্রে তা ছিল ১৮ কিমি। প্রতি ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণও মেঘ ভাঙনের তুলনায় অনেক কম ছিল।
পূর্বাভাসের দ্বিগুণ বৃষ্টি
আইএমডি প্রথমে ১১৫ মিমি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তার দ্বিগুণেরও বেশি বৃষ্টি হয়। দক্ষিণবঙ্গ থেকে মেঘ সরাসরি কলকাতার দিকে সরে আসায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জোয়ার, বদ্ধ নালা এবং অবৈধ নির্মাণ, যা জলাবদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শহরে প্রায় ৯০০টি পাম্প বসানো হলেও মাত্র ৬ ইঞ্চি জল নামানো গেছে, কারণ ভাটার সময়ও নদী পূর্ণ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে গঙ্গা পরিষ্কারে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন। তিনি উজান থেকে জল নামার কথাও উল্লেখ করেন, যদিও দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন তা অস্বীকার করেছে।
পুজোয় বৃষ্টির শঙ্কা
আইএমডি সতর্ক করেছে, ২৫-২৬ সেপ্টেম্বর হালকা বৃষ্টি হলেও ২৭-২৮ তারিখে ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই মায়ানমার উপকূলে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে, যা ওড়িশার দিকে অগ্রসর হবে। এর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গেও বৃষ্টি হতে পারে। ফলে দুর্গাপূজার আগে প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পুজো কমিটিগুলি।