টিকিট পেলেন না নুসরত জাহান। আগে থাকতেই এমনটা ইঙ্গিত মিলছিল শাসকদলের তরফে। নুরসত নিজের কেন্দ্রে যেতেন না বলেও অভিযোগ উঠছিল। উনিশের লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে প্রার্থী করেছিলেন বসিরহাটে। তাঁরা দুজনেই জিতেছিলেন। তবে এবার আগেই পরিষ্কার হয়ে গেছিল যে নুসরত জাহানকে এবার প্রার্থী করবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিমি চক্রবর্তীকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হুগলিতে প্রার্থী করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় তমলুক বা কাঁথি থেকে প্রার্থী হতে না চাওয়ায় তাঁকে হুগলিতে প্রার্থী করা হয়েছে। আর মিমিকে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রার্থী তালিকা থেকে।
লোকসভার প্রার্থী তালিকায় কমবে তারকা, বাড়বে রাজনৈতিক মুখের সংখ্যা— তৃণমূল সূত্রে ইঙ্গিত মিলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। তৃণমূলের যে প্রার্থী তালিকা রবিবার ঘোষিত হল, তা থেকে স্পষ্ট যে, অন্তত দুই তারকা সাংসদের উপরে এ বার আর ভরসা রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তারকা-তালিকায় সবচেয়ে বড় চমক ইউসুফ পাঠান এবং রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নুসরত যে এবার লোকসভা ভোটে টিকিট পাবেন না, সে জল্পনা রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে বেশ কিছু দিন ধরেই চলছিল। কিন্তু মিমি চক্রবর্তীর নাম সে ভাবে আলোচনায় আসেনি। যাদবপুরের মতো সেই আসনে এবার সায়নী ঘোষকে প্রার্থী করে বেশ চমকে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বহুদিন থেকে বসিরহাটবাসির ক্ষোভ, সাংসদ হিসেবে কোন কাজই করেন না নুসরত। তাঁকে দেখাও নাকি যায় না এলাকায়। বহুদিন থেকে এলাকাবাসীর ক্ষোভ, সাংসদ হিসেবে কোন কাজই করেন না নুসরত। তাঁকে দেখাও নাকি যায় না এলাকায়। একবার বসিরহাট জুড়ে পোস্টার পড়েছিল ‘নিখোঁজ’ সাংসদ নুসরত জাহান। নিখোঁজ সাংসদের খোঁজ চাই বলে পোস্টার পড়ায় জোর আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল ওই এলাকায়।
সূত্রের খবর, পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটকাণ্ড নুসরত জাহানকে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়া আটকে দিল। দক্ষিণবঙ্গের ওই লোকসভা আসনে সংখ্যালঘু ভোটারের পরিমাণ প্রায় ৪৯ শতাংশ। এই কেন্দ্রে প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম।
সূত্রের খবর, নুসরতের সাংসদ হিসেবে ভূমিকা নিয়ে সংসদীয় দলের একাংশে প্রশ্ন রয়েছে। বসিরহাটের স্থানীয় তৃণমূলও নুসরতের ভূমিকায় ‘সন্তুষ্ট’ নয়। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট লোকসভা আসনটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। বাদুড়িয়া, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, বসিরহাট উত্তর, বসিরহাট দক্ষিণ, হিঙ্গলগঞ্জ— এই সাতটি বিধানসভা পড়ে বসিরহাট লোকসভার মধ্যে।
২০০৯ সালে বসিরহাটে হাজি নুরুল ইসলামকে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। ২০১৪ সালে নুরুলকে সরিয়ে ইদ্রিশ আলিকে প্রার্থী করা হয়। ২০১৯-এ আবার ইদ্রিশকে সরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুটা চমক দিয়েই টলিতারকা নুসরতকে বসিরহাটে লড়তে পাঠিয়ে দেন। তবে বসিরহাটের দুই ‘অপসারিত’ সাংসদ নুরুল এবং ইদ্রিশকে বিধানসভায় ‘পুনর্বাসন’ দিয়েছিলেন তৃণমূল। এবার ফের নুরুলকেই ভরসা করল দল।