মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় বিতান অধিকারীর। ফ্লোরিডায় কর্মরত ছিলেন কলকাতার বাসিন্দা বিতান অধিকারী। দেশে ফিরে কয়েকদিনের জন্য় স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। বাড়িতে অপেক্ষায় ছিল গোটা পরিবার। ফিরলেন তিনি। ফুলে ঢাকা কফিনে। চোখের সামনে স্বামীকে খুন হতে দেখেছেন বিতানের স্ত্রী। সেই স্বামীর নিথর দেহ নিয়ে তিনি ফিরলেন অঝোরে কান্না সঙ্গী করে।
কলকাতায় ফেরার পরে বিমানবন্দরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সোহিনী অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বাচ্চাকে কোলে তুলে নেন। বিতানের স্ত্রী বলেন, আমার হাজব্যান্ড আপনাদের খুব মানত স্যার। শুভেন্দু বলেন, হিন্দুস্তানে হিন্দুকে খুন করবে! গাজা শেষ হয়েছে। ইজরায়েল শেষ করেছে। আমরাও শেষ করব। মোদীর শিষ্য আছি। এদিকে বিতানের স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ...স্যার আমি আপনার ভরসায় এসেছি। অগ্নিমিত্রা পালও নানাভাবে তাঁকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন সোহিনী অধিকারীকে।
এ ব্যাপারে শুভেন্দুর ফেসবুক পেজ থেকে বিমানবন্দরের সাক্ষাৎপর্বের লাইভও করা হয়। তাতে দেখা যায়, বিতানের স্ত্রী শুভেন্দুকে বলছেন, "আপনারা আছেন বলেই এসেছি। আপনাদের ভরসা করি। আমার স্বামীর খুনিদের শাস্তি চাই।" বিতানের ছোট্ট ছেলেকে কোলে তুলে শুভেন্দু আশ্বস্তও করেন। সে সময় বিতানের স্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, "আমার সব শেষ হয়ে গেল। ওর চোখের সামনে ওর বাবাকে মেরেছে!"
মৃতের স্ত্রীর দাবি, তাঁর কপালে সিঁদুর দেখে খুন করা হয়েছে বিতানকে। আর এই নিয়েই এবার ফেসবুক পোস্টে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
ফেসবুক পোস্টে কুণাল ঘোষ লেখেন, 'প্রথমে টিভিতে বাইট: হিন্দু মুসলমান বেছে মারেনি। পরে বিজেপি নেতাদের সামনে: হিন্দু বলে মেরেছে। মুখ্যমন্ত্রীসহ রাজ্যের প্রশাসনের অন্তত কুড়িটি ফোন। ফেরার সব সাহায্য। ফিরে বিজেপির সামনে: আপনাদের ভরসায় ফিরেছি। মৃতের বাবা মা অসহায়। ছেলে নেই। পুত্রবধূ তাঁদের কাছে থাকতেন না, দেখতেন না। তাঁরা অনিশ্চয়তায়। এখন শোকের বাতাবরণ। তাই অপ্রিয় প্রশ্ন তুলছি না। বাড়াবাড়ি রাজনৈতিক দ্বিচারিতার নাটক, শেখানো সংলাপে বিষ ছড়ানো দেখলে বলবই। যিনি যা মনে করেন, করবেন। আপাতত একটা জরুরি বাস্তব কথা। প্রয়াত বিতান অধিকারীর পরিবারের জন্য দুই সরকার যদি কিছু ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেন, তা যেন শুধু পুরোটা স্ত্রীকে দেওয়া না হয়। বিতানের বৃদ্ধ বাবা মায়েরও সাহায্য দরকার। ওঁদের পরিবারের যা সমীকরণ, তাতে এই দুজন ঘোরতর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।'