
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে বাম-কংগ্রেসের জোট জল্পনা উস্কে দিল একটি অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ, কংগ্রেসের দেবপ্রসাদ রায়, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী প্রবোধচন্দ্র সিনহা প্রমুখ। যদিও অনুষ্ঠানে দেশের বর্তমান অবস্থা, সাম্য, সম্প্রীতির বার্তা দেন দুই দলের নেতারাই। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আদতে এটা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হলেও সাগরদিঘি মডেলেই পঞ্চায়েত ভোটে নামতে চাইছে বাম-কংগ্রেস। সেই বার্তায় দিতে চেয়েছে আলিমুদ্দিন-বিধানভবন।
রাজনৈতিক মহল এও মনে করছে, এমনটা মনে করার কারণ, অনুষ্ঠানের উদ্য়োক্তা সুমন রায় চৌধুরী। তিনি নিজে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক। তাঁর উদ্যোগ্যেই পার্কস্ট্রিটে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানটি বর্ষবরণের হলেও সেখানে ডাকা হয়নি তৃণমূল বা বিজেপির কোনও প্রতিনিধিকে। বরং, অনুষ্ঠানে যাঁরা বক্তব্য রাখেন, তাঁরা প্রত্যেকেই সম্প্রীতি, বিভেদমুক্ত দেশ ও রাজ্যের কথা বলেন। সেই থেকেই কার্যত পরিষ্কার এখন থেকেই আসলে পঞ্চায়েতের ঘর গোছাতে চাইছে বাম-কংগ্রেস শিবির।
আরও পড়ুন : 'হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বৈঠকের আহ্বান জানায়নি রাজ্য', হুঁশিয়ারি ডিএ আন্দোলনকারীদের
এই নিয়ে সুমন রায় চৌধুরী বলেন, 'রানা রায় চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠান সম্ভব হয়েছে। মহম্মদ সেলিম, দেবপ্রসাদ রায়-সহ দুই শিবিরের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বক্তব্য রাখেন, গান করেন অনেকে। এটাকে আপনারা পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি হিসেবে দেখবেন কিনা, আপনাদের ব্যাপার। মানুষই শেষ কথা বলবে।'
বিজেপি ও তৃণমূলকে কেন ডাকা হয়নি অনুষ্ঠানে ? সুমনবাবু বলেন, 'আমরা মনে করি বিজেপি ও তৃণমূল এই দুই দলই একই মুদ্রার দুই পিঠ। দেশ ও রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয় এদের জন্যই। বিজেপি তো ঘোষিত সাম্প্রদায়িক দল। তাই তাদের ডাকার প্রশ্নই ওঠে না।' সুমনবাবুর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, 'বাম ও কংগ্রেসই হল একমাত্র দল যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে সবসময় কাজ করে। ভবিষ্যতেও করবে।'
আরও পড়ুন : 'শহিদ মিনারে এসে বকেয়া মিটিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী', হালখাতা প্রকাশ সরকারি কর্মীদের
তাহলে কি পার্কস্ট্রিটের অনুষ্ঠান থেকেই পঞ্চায়েতের জোট পাকা হয়ে গেল? এবার সুমনবাবুর উত্তর, 'জোট হবে কি না তা বলার বা নির্ধারণ করার অধিকার আমাদের নেই। যা করবে হাইকমান্ড।'
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, ফিরদৌস শামিম-সহ একাধিক চেনা মুখ। এছাড়াও প্রাক্তন পুলিশ কর্তা, অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিজেপি, তৃণমূল শুধু নয়, এই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি আইএসএফ-র কোনও সদস্যকেও। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিধানসভা ভোটের সময় আসন বিভাজন নিয়ে আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সেই দলের কোনও সদস্যকেই।