বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে কলকাতা এসেছিলাম। এমনই দাবি করলেন পটনা শ্যুট আউটে ধৃত নিশু খান। এদিন আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেই সময় অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে শুয়েই সংবাদমাধ্যমকে বিবৃতি দেন। বলেন, 'গার্লফ্রেন্ড এখানকার। তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। প্রথমে শাপুরজি এসেছিলাম। তারপর তৌসিফের বন্ধুকে পাওয়া যায়নি। তাই পার্ক স্ট্রিটে গিয়েছিলাম।' নিশু খানের দাবি, এরপর পার্ক স্ট্রিটে হোটেল না পেয়ে আনন্দপুরের হোটেলে যান তাঁরা। সেই হোটেলের হদিশও নাকি তাঁর গার্লফ্রেন্ডই দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে সেই হোটেলেই ছিলেন। আর সেখান থেকেই তাঁদের পাকড়াও করে পুলিশ।
পটনা শ্যুটআউট কাণ্ডের অভিযুক্তকে কলকাতায় মেলার পর থেকেই তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। গেরুয়া শিবিরের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে পরিকল্পিতভাবেই এসে আশ্রয় নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। যদিও নিশু খানের দাবি, তার নাকি অনেক আগে থেকেই কলকাতায় আশা যাওয়া ছিল। এদিন অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই সে জানাল, তার বোনের বিয়ে হয়েছে কলকাতায়। সেই সূত্রে ২০২১ সাল থেকেই তার কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
তবে এদিন শ্যুটআউটের জন্য কোনও টাকা পেয়েছিন কিনা, সেই বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন নিশু খান। তাঁর দাবি, তিনি কোনও টাকাই নেননি। তাঁর ভাইও টাকা নেননি বলে দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, 'তৌসিফ একবার ২০২২-এ জেলে চলে গিয়েছিল। তারপর কিছু ভুলভাল মানুষের সঙ্গে বন্দুত্ব হয়েছিল। তারপর ও বাইরে আসার পর আমার উপর শুটআউট হয়েছিল। তারপর থেকে আমার সঙ্গেই ছিল। তৌসিফ আমার থেকে বয়সে অনেক ছোট। কাজ করে ফেলেছে, কী করেছে, কী ভেবেছে, বন্ধুর জন্য করেছে কিনা, ও-ই বলতে পারবে।'
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার পটনার একটি হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে আইসিইউতে ভর্তি থাকা এক রোগীকে গুলি করে খুন করে একদল দুষ্কৃতী। মৃত ব্যক্তি নিজেও গ্যাংস্টার ছিলেন। সেই ঘটনায় কলকাতার গেস্ট হাউস থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সিসিটিভির ফুটেজে পাওয়া পটনার দুষ্কৃতীদের একটি সাদা রঙের গাড়ির সূত্র ধরে এসটিএফ ৫ জনকে গ্রেফতার করে বিহার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। অভিযুক্তদের জেরা করা হচ্ছে পুলিশের তরফে।
পটনার পারস হাসপাতালে চন্দন মিশ্র হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ শুটার তৌসিফ, নিশু সহ ৫ জনকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয়। দুষ্কৃতীরা খুনের পর সটান কলকাতায় পালিয়ে এসে উঠেছিল আনন্দপুরের অতিথি আবাসে। শনিবার রাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে তাঁদের প্রথমে আটক করে
গত বৃহস্পতিবার সকালে পটনার পারস হাসপাতালের আইসিইউতে ঢুকে ২০৯ নম্বর কেবিনে শুয়ে থাকা কুখ্যাত দুষ্কৃতী চন্দন মিশ্রকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি ছোড়ে মূল শুটার তৌসিফ রাজা ও তার চার সঙ্গী। হাসপাতালের বেডেই গুলিতে মৃত্যু হয় চন্দনের। পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের পর পানার হাসপাতাল থেকে একটি সাদা রঙের গাড়ি করে খুনিরা পালিয়ে যায়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের একটি টোল প্লাজার সিসিটিভির ফুটেজে ওই গাড়িটির ছবি ধরা পড়ে। সেই সূত্রের খবর পেয়ে রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা তদন্তে অগ্রসর হন।