সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু আধিকারী। সন্দেশখালিতে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছে। সন্দেশখালিতে আদিবাসী সমাজ ও সেখানকার মহিলাদের অবস্থা ভালো নয়, ইতিমধ্যেই জানিয়েছে কেন্দ্রের মহিলা কমিশন ও তপশিলি কমিশন। তার মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী জানালেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী আসতে পারেন সন্দেশখালিতে।
ইন্ডিয়া টু-ডে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুভেন্দু অধিকারী জানান, প্রধানমন্ত্রীর আসার প্রস্তুতি নেওয়া হবে। যদিও তারিখ এখনও জানানো হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে তারিখ ঘোষণা করা হবে। সূত্রের খবর, আগামী ৭ মার্চ বারাসতে সভা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেদিনই তিনি সন্দেশখালিও যেতে পারেন। কথা বলতে পারেন নির্যাতিতাদের সঙ্গে।
এদিকে সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে দেখা করতে কাল মঙ্গলবার যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। ৪ জায়গা থেকে সেই ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারপরই শুভেন্দু অধিকারী জানান তিনি সন্দেশখালি যাবেন।
এর আগে এসসি কমিশন সন্দেশখালিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করেছিল। এদিন সেখানে যায় জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের দাবি, সন্দেশখালিতে দিনের পর দিন মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশে আস্থা নেই সেখানকার মহিলাদের। রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া কোনও উপায় নেই, রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষেই সওয়াল করলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার।
চলতি মাসের শুরুতে দফায় দফায় অশান্তির ঘটনা ঘটে সন্দেশখালিতে। গ্রামের মহিলারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মহিলাদের একাংশ দাবি করেছিলেন, দিনের পর দিন তাঁদের ওপর যৌন নির্যাতন হয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের দুই প্রতিনিধি সন্দেশখালির হালদারপাড়া, পুকুরপাড়া ও লস্করপাড়ার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। জাতীয় মহিলা কমিশনের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পোস্টে বলা হয়, সন্দেশখালি থেকে যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে মহিলাদের ওপর অত্যাচার প্রকাশ্যে এসেছে। নির্যাতিতাদের যাতে দ্রুত নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তার দাবিও জানায় জাতীয় মহিলা কমিশন।
এদিকে সন্দেশখালিতে ধর্ষণের অভিযোগ করা মহিলার পরিচয় প্রকাশের জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে তিনি এই চিঠি পাঠান। অভিযোগ করেন, শিবু হাজরার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা এক মহিলার নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, ওই মহিলার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডও করা হয়েছে।
চিঠিতে সুকান্ত লিখেছেন,'পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালি এলাকায় যে ঘটনাটি ঘটছে তা আপনারা ভাল করেই জানেন। বিভিন্ন নৃশংসতা, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ ওই এলাকার নারীদের। গ্রাউন্ড রিপোর্ট পেতে NCW-এর দল ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে। আপনি ওই এলাকায় স্থানীয় পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কার্যকলাপ সম্পর্কে ভাল জানেন। সম্প্রতি, অভিযুক্তদের একজন শিবু হাজরাকে স্থানীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। একজন নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ সেই মহিলার অভিযোগ যে ওই এলাকার অপরাধীরা তাঁর বাড়ি ভাংচুর করেছে এবং শিবু হাজরা এবং অন্যদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার জন্য তাঁর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এই ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী, কারণ তারা ভিকটিম মেয়েটির পরিচয় প্রকাশ করেছে।'