আড়িয়াদহ কাণ্ডের ৪ দিন পর অবশেষে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং। বৃহস্পতিবার জয়ন্ত বেলঘরিয়া থানায় আত্মসমর্পণ করেন। তারপরই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জয়ন্ত সিংকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আড়িয়াদহে এক প্রৌঢ়া ও তাঁর ছেলেকে বেধড়ক মারধরে অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং। জয়ন্ত সিং এলাকায় তৃণমূল নেতা নামেই পরিচিত। তাকে আবার অনেকেই ‘জায়েন্ট সিং’ বলে ডাকে।
এই জয়ন্ত সিং-এর সঙ্গেই কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের ছবিকে ঘিরে তুমুল বিতর্ক ছড়ায়। আড়িয়াদহে মা ও ছেলেকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত এই জয়ন্ত সিং। সেই ঘটনার চারদিনের মাথায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি, এমনটাই খবর। বৃহস্পতিবার দুপুরেই জয়ন্তকে আদালতে পেশ করা হবে। যদিও ৪ দিন পর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তাদের কথায়, পুলিশ জয়ন্তর টিকিও ছুঁতে পারেনি বরং তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন। খাতায় কলমে তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পাল্টা রাজ্যের শাসক দলের দাবি, অপরাধ নিয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার বেলঘরিয়ার আড়িয়াদহের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া ও তাঁর ছেলেকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, কলেজ পড়ুয়া সায়নদীপ পাঁজার সঙ্গে কিছু একটা বিষয় নিয়ে পাড়ারই ছেলেদের বচসা হয়। সাময়িকভাবে বিষয়টা মিটেও যায়। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনেই বসেছিলেন সায়নদীপ। অভিযোগ, তখন ৮-১০ জন যুবক তাঁর ওপর হামলা চালায়। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর মাও। মারের চোটে সায়নদীপের দাঁত ভেঙে যায়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পায় পুলিশ। মূল অভিযুক্তের তালিকায় উঠে আসে জয়ন্ত সিংয়ের নাম। এই ঘটনায় সায়নদীপের পরিবার জয়ন্ত সিং ও তার দলবলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং অধরাই ছিলেন। পুলিশের চোখে ফেরারই ছিলেন জয়ন্ত। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নেতাকে খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে বেলঘরিয়া থানায় হাজিরা দেন জয়ন্ত।
এদিকে অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংয়ের সঙ্গে মদন মিত্রের ছবি প্রকাশ্য আসায় বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়ে মদন মিত্রবলেন, 'আমার সঙ্গে কারও ছবি থাকতেই পারে, আমার কোনও দায় নেই। আমার সঙ্গে সবাই মেলামেশা করে, আমি কী করব? ক্রাইমের দায় আমার নয়। অন্যায় করলে পুলিশ পদক্ষেপ করবে।' অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংহের সঙ্গে মদন মিত্রের বৌমা মেঘনা মিত্রর ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি কামারহাটি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরও।