আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। তবে বিজেপি এই রায়কে "ন্যায়বিচারের প্রহসন" বলে উল্লেখ করেছে এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রধান এবং পশ্চিমবঙ্গের সাংগঠনিক সহ-ইনচার্জ অমিত মালব্য এই রায়কে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, "আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ন্যায়বিচারের প্রহসন। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা উচিত।"
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৎকালীন কলকাতা পুলিশের কমিশনার প্রমাণ লোপাটের জন্য দায়ী এবং এই বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। মালব্য বলেছেন, "ন্যায়বিচার কেবল করা উচিত নয়, তা দৃশ্যমান হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।"
মামলার পটভূমি
২০২৪ সালের ৯ আগস্ট, আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার রুমে এক তরুণ শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে জানা যায়, তাকে যৌন নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে।
সিবিআইয়ের তদন্তে সঞ্জয় রায়কে অভিযুক্ত করা হয় এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩০২ (খুন) এবং ২০১ (প্রমাণ লোপাট) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়। শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অনির্বাণ দাস শনিবার রায় প্রদান করেন।
রায়ের ভিত্তি
বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, যদিও অপরাধটি ভয়াবহ এবং নিন্দনীয়, তা "বিরলতম বিরল" বিভাগের অধীনে পড়ে না, যে কারণে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মমতা সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক
বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এই মামলায় অভিযুক্তদের রক্ষার চেষ্টা করেছে এবং তদন্তে অসহযোগিতা করেছে। তারা মুখ্যমন্ত্রী এবং তৎকালীন কলকাতা কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।