Rabindra Sarobar: রবীন্দ্র সরোবরে নেমে ডুবে মৃত কিশোর সাঁতার জানত না, মামলা দায়ের পরিবারের

রবিবার সকালে কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে ঘটে যায় এক  দুর্ঘটনা। সাঁতার না জেনেও জলে নেমে পড়েছিল বর্ধমানের এক ১৬ বছরের কিশোর। জলজ আগাছা ও কচুরিপানায় পা আটকে মৃত কিশোরের নাম শিবম কুমার সিং। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

Advertisement
রবীন্দ্র সরোবরে নেমে ডুবে মৃত কিশোর সাঁতার জানত না, মামলা দায়ের পরিবারেররবীন্দ্র সরোবরে মৃত্যু ১৬ বছরের কিশোরের
হাইলাইটস
  • রবিবার সকালে কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে ঘটে যায় এক  দুর্ঘটনা।
  • সাঁতার না জেনেও জলে নেমে পড়েছিল বর্ধমানের এক ১৬ বছরের কিশোর।

রবিবার সকালে কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে ঘটে যায় এক  দুর্ঘটনা। সাঁতার না জেনেও জলে নেমে পড়েছিল বর্ধমানের এক ১৬ বছরের কিশোর। জলজ আগাছা ও কচুরিপানায় পা আটকে মৃত কিশোরের নাম শিবম কুমার সিং। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

ঘটনাটি ঘটে বালিগঞ্জ প্লেসের কাছে রবীন্দ্র সরোবরের এক পাবলিক সুইমিং পুলে। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মীয়ের বাড়িতে আসার পর রবিবার সকালে শিবম তার দুই বন্ধু অভিষেক ও নিখিলকে নিয়ে সরোবর ঘুরতে যায়। ওই দিন সকালে শিবম ও অভিষেক জলে নামে, যদিও দু’জনের কেউই সাঁতার জানত না। নিখিলকেও জলে নামতে নিষেধ করা হয়, কারণ সেও সাঁতারু ছিলেন না।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায়, প্রথমে অভিষেক ডুবে যেতে শুরু করলে, এক স্থানীয় সাঁতারু ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু ততক্ষণে বোঝা যায়, শিবম নিখোঁজ। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। প্রায় ৪৫ মিনিট পর শিবমকে জল থেকে উদ্ধার করা হয়, তখন তার পা কচুরিপানায় জড়িয়ে ছিল বলে জানায় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনার পরেই শোরগোল পড়ে যায়। শিবমের পরিবার ও স্থানীয়দের তরফে অভিযোগ ওঠে—পাবলিক সুইমিং পুলে কোনও ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি কোনও লাইফগার্ড পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন না। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কেএমডিএ-র নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মীদের বিরুদ্ধে অবহেলার ফলে মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।

কেএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন একজন দারোয়ান পুলের গেট খোলেন ও বন্ধ করেন, কিন্তু সাঁতারুদের দেখভালের জন্য কেউ নিযুক্ত নন। এক আধিকারিক জানান, এই পুলটি সবার জন্য খোলা। যারা আসেন, তাদের নিজ দায়িত্বেই সাঁতার কাটতে হয়। এখানে লাইফগার্ড নেই।

রবীন্দ্র সরোবরে তিনটি নামী সাঁতার ক্লাব রয়েছে—ক্যালকাটা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন, লেক ফ্রেন্ডস এবং ইন্ডিয়ান লাইফ সেভিং সোসাইটি (ILSS)। তারা আলাদা করে জলাশয়ের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করলেও, পুলের যে অংশটি সাধারণ মানুষের জন্য খোলা, সেখানেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

এখানে আরও একটি জলাশয় রয়েছে, যেটি রোয়িং অনুশীলনের জন্য ব্যবহৃত হয়। অতীতে এখানেও ঘটেছে দুর্ঘটনা। প্রায় তিন বছর আগে, আন্তঃস্কুল রেগাটার প্রস্তুতির সময় ঝড়ো আবহাওয়ায় দুই প্রশিক্ষিত ছাত্র—পুষণ সাধুখা ও সৌরদীপ চ্যাটার্জী—ডুবে মারা যান। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এই মৃত্যু নতুন করে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।

ছেলের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে শিবমের বাবা অশোক কুমার সিং বর্ধমান থেকে কলকাতায় ছুটে আসেন। তিনি বলেন, “আমার ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। শনিবার কিছু জিনিস সংগ্রহ করতে সে কলকাতায় এসেছিল। পরের দিনই ওর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। জানি না কীভাবে এই ঘটনা ঘটল। ও আমার সঙ্গেই থাকত।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও উঠে আসছে প্রশ্ন—খোলা জলাশয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে না কেন? কে দায় নেবে এরকম দুর্ঘটনার জন্য?

 

POST A COMMENT
Advertisement