আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উল্টোদিকেই বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনী পুজো কমিটি। এ বছর তাঁদের দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে কমিটির আহ্বায়ক রমেশ পাণ্ডে বলেন, "আমাদের পাড়ার হাসপাতালে এত বড় ঘটনা ঘটেছে, তারই প্রতিবাদে আমরা সরকারি অনুদান নিচ্ছি না। আমরা বিচারের দাবিতেই অনুদান প্রত্যাখান করছি।" গত মাসে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুরো ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে, তা সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয় ক্লাবগুলির মধ্যে প্রবল ক্ষোভের সঞ্চার করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভৈরব মুখার্জি লেনে বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনী দুর্গাপুজো তাদের সাবেকি পুজোর জন্য সুপরিচিত। প্রতিবছর পুজোর চার দিনেই বহু মানুষের সমাগম ঘটে এখানে। কিন্তু এবছর পুজোর আয়োজন কিছুটা হলেও ভিন্ন হবে। রমেশ পাণ্ডে জানান, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে তাঁদের ক্লাব এবছর পুজোর জন্য সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছে। যদিও পুজো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে, তবে জাঁকজমক কিছুটা কমিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, "এবার আমরা স্থানীয় মানুষদের চাঁদা দিয়েই পুজো করব।"
পুজো কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও জানান, গতবছর তাঁরা পুজোর জন্য সরকারি অনুদানের টাকা গ্রহণ করেছিলেন এবং সেই অর্থ মূলত সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও জনহিতকর কর্মসূচীর প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এবছর আরজি করের ঘটনায় গভীর দুঃখ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা সরকারি সাহায্য নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁরা সরকারি পোর্টালে সেই অনুদান প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্ত শুধু বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর একক নয়। সারা বাংলার বিভিন্ন ক্লাব আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সরকারি অনুদান গ্রহণ না করার ঘোষণা করেছে। তাঁদের দাবি, হাসপাতালের ঘটনায় তথ্য-প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। এর প্রতিবাদে রাজ্যের বহু ক্লাব এ বছর পুজোর জন্য সরকার থেকে অনুদান বয়কট করছে।
এমন অবস্থায়, পুজোর আয়োজন আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও প্রতিবাদ হিসেবে এই বছর পুজো পালন হবে আরও অর্থবহ। স্থানীয় মানুষরা নিজেদের উদ্যোগে এই পুজোকে সফল করার জন্য চাঁদা দিয়েছেন এবং পুজোর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার আশ্বাসও দিয়েছেন। বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনী পুজো কমিটির এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের অন্যান্য ক্লাবগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।