আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ছাত্রীর হত্যাকাণ্ডের একবছর পূর্তিতে ডাকা নবান্ন অভিযানে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৯ অগাস্টের ওই অভিযানে মিছিল থেকে একাধিক স্থানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোঁড়া ও আক্রমণ করা হয়। ঘটনায় পাঁচজন পুলিশকর্মী আহত হন। প্রতিবাদ মিছিলের সময়ে ভাঙচুর, মারধর এবং কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করায় বিজেপির ছয় নেতাকে নিউ মার্কেট এবং হেয়ার স্ট্রিট থানায় তলব করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানান হয়েছে। শুধু তাই নয়, কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ছয় বিজেপি নেতাকে নোটিসও পাঠানো হচ্ছে।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ, তমোঘ্ন ঘোষ, বিধায়ক অশোক দিন্দা, ভোলা শংকর, কুশল পাণ্ডে ও কমলজিৎ সিংহকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে খবর। আরজি কর কাণ্ডের একবছরে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল গত শনিবার। মিছিলের একাধিক জায়গা থেকে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশও প্রতিরোধ করেছিল। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়, জয়েন্ট কমিশনার হেড কোয়ার্টার মিরাজ খালেদ ও গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার। সেদিনের ঘটনায় মোট পাঁচজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। পুলিশের উপর আক্রমণের একাধিক ভিডিও ও ফুটেজ দেখানো হয় লালবাজার থেকে। পুলিশের উপর হামলার একাধিক ফুটেজ ও ছবি দেখানো হয়েছে। সেদিনের ঘটনায় বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা, বিজেপি কাউন্সিলর তমোঘ্ন ঘোষ, উত্তর কলকাতার বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ-সহ মোট ছ’জনকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে খবর।
সংবাদ সংস্থা PTI-কে এক পুলিশ আধিকারিক জানান, টশনিবারের সমাবেশে দিন্দা আমাদের আধিকারিকদের হুমকি দিয়েছিলেন এবং অন্যদের কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের উপর হামলা করার জন্য উস্কে দিয়েছিলেন। তিনি একআইএএস অফিসারের রক্ষীকেও লাঞ্ছিত করেন। তাঁকে ১৭ অগাস্ট নিউ মার্কেট থানায় হাজির হওয়ার জন্য সমন পাঠানো হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের একবছরে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। নির্যাতিতার বাবা-মা নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গ বিজেপির তরফে সেই মিছিলকে সমর্থন করে পথে নামা হয়েছিল। শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক বিজেপি নেতা মিছিলে শামিল হয়েছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নবান্ন অভিযানের কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। সমাজ মাধ্যমের থেকে পুলিশ এই অভিযানের কথা জানতে পারে। কলকাতা হাই কোর্টের কথা মেনে কলকাতা পুলিশ মিছিলের জন্য কিছু জায়গা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন জানানো হয়, ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে এসে সেই মিছিলের অভিমুখ বদল করা হয়েছিল। নির্ধারিত পথে না গিয়ে চৌরঙ্গীর দিকে মিছিল এগোতে থাকে। প্রায় ৫০০ জন সেখানে জড়ো হয়েছিল। পুলিশ পথ আটকালে তাদের উপর আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে পুলিশকে আক্রমণ প্রতিহত করতে হয়। মিছিল থেকে আক্রমণের জেরে পাঁচ পুলিশ কর্মী জখম হন। তাঁ
ওই দিনের ঘটনায় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ৭ এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। দিন্দা ছাড়াও, পুলিশ বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং দলের আরেক নেতা কৌস্তভ বাগচীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। কলকাতা পুলিশের আওতাধীন নিউ মার্কেট থানায় চারটি এবং হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।