আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। তিনি শুধু এই মামলার জন্যই নয়, বরং তার নিজের পরিবারের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার এবং অত্যাচারের অভিযোগের জন্যও খবরের শিরোনামে রয়েছেন।
প্রতিবেশীরা বলছেন, বারাসতের রথতলা মোড় সংলগ্ন হৃদয়পুরের মল্লিকবাগানে যখন তিনি বসবাস করতেন, তখন তার আচরণ ছিল অত্যন্ত কঠোর এবং নির্মম। সেই সময় তিনি বাড়ির নীচেই একটি চেম্বার খুলেছিলেন, যেখানে তিনি রোগী দেখতেন। কিন্তু, প্রতিবেশীদের মতে, রোগীদের সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন না। ফিজ নির্দিষ্ট থাকলেও, রিপোর্ট দেখানোর জন্যও আবার ফিজ দিতে হত।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও গুরুতর। প্রতিবেশীরা অভিযোগ করছেন, সদ্য সন্তানের জন্ম হওয়ার পরও সন্দীপ ঘোষ তার স্ত্রীর পেটে লাথি মেরেছিলেন। সেই সময় প্রতিবেশীরা তার স্ত্রীকে উদ্ধার করেছিলেন, যিনি মাত্র একটি নাইটি পরে কোনোরকমে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তাদের ১৪ দিনের শিশুটির শরীরে তখন কোনও কাপড়ও ছিল না। প্রতিবেশীদের কথায়, ডা. সন্দীপ ঘোষের এই আচরণ তাঁকে এলাকায় একজন খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
উল্লেখ্য, সন্দীপ অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকাকালীনই আরজি করে মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার পরেই সন্দীপের অপসারণের দাবিতে সরব হন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই দাবির চাপে সন্দীপকে আরজি করের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরলেও সোমবারই তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে। সরকারের ওই সিদ্ধান্ত জানার পর থেকে নতুন করে সন্দীপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তাঁরা সন্দীপকে কলেজে ঢুকতে দেবেন না। অবস্থান বিক্ষোভও শুরু করেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে আপাতত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দায়িত্ব সন্দীপকে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্যভবন। সূত্রের খবর, ন্যাশনাল মেডিক্যাল এখন পুরনো হাতেই থাকবে। চিকিৎসক অজয় রায়ই সামলাবেন অধ্যক্ষের দায়িত্ব।