আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ডে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হতেই তার মুখে উঠল কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নাম। আদালতে পৌঁছেই সঞ্জয় রায় সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করে বলেন, “আমাকে প্রাক্তন সিপি বিনীত গোয়েল এবং ডিসি স্পেশ্যাল ইচ্ছে করে ফাঁসিয়েছেন।” সঞ্জয়ের এই দাবি ওঠার পরই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। রাজ্যপাল জানতে চেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের ভূমিকা এবং রাজ্যের অবস্থান।
সঞ্জয়ের অভিযোগ এবং রাজভবনের প্রতিক্রিয়া
সঞ্জয় রায়ের দাবির পর রাজভবন থেকে জানানো হয়েছে যে রাজ্যের উচিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে সঠিক সত্য উদঘাটন করা এবং এই অভিযোগের পেছনের বাস্তবতা যাচাই করা। রাজ্যপালের এই রিপোর্ট চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, একজন অভিযুক্ত, যে বারবার নিজের বক্তব্য বদলেছে, তার মন্তব্যের ভিত্তিতে কীভাবে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে রিপোর্ট চাইতে পারেন। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ঘটনাটি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
সঞ্জয় রায়ের নিরাপত্তা এবং নতুন করে প্রশ্ন
সঞ্জয় রায়ের নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সঞ্জয়কে কড়া নিরাপত্তায় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে শিয়ালদহ আদালতে আনা হয়। ছোট এবং কালো কাঁচ ঢাকা গাড়িতে লোহার জাল দিয়ে সঞ্জয়কে ঢেকে আনা হয় যাতে তার মুখ দেখা না যায়। এমনকি তার প্রিজন ভ্যানের সামনে এবং পিছনে আরও দুটো গাড়ি ছিল। বিরোধীদের দাবি, সঞ্জয় যাতে আদালতে কারও নাম না নেয়, সেই কারণেই তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
প্রথম দিকের বয়ান এবং অভিযোগে মোড় ঘোরা ঘটনা
আরজি কর হাসপাতালে নৃশংস ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার পর সঞ্জয় নিজেকে দোষী বলে দাবি করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সে আদালতে পাল্টা দাবি তোলে যে, তাকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। এরপর সিবিআই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলে সঞ্জয়ের আচরণে উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়। শাসক শিবিরের মতে, এই মামলায় অভিযুক্তের বিভিন্ন মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত ও রাজ্যের অবস্থান ঠিক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।