ফের একবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের। রবিবার ডার্বি বাতিল হওয়ায় যুবভারতী স্টেডিয়ামের বাইরে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যৌথভাবে সামিল হয়েছিল ময়দানের দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সমর্থকরা। 'দুই গ্যালারির এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর', এই স্লোগানেই রবিবার যুবভারতী স্টেডিয়ামের বাইরে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ফেটে পড়েন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সমর্থকরা। জমায়েত হাতের বাইরে বেরোতেই সেখানে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পুলিসের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে আরও বৃহত্ আকার নেয় তাঁদের প্রতিবাদ। আর যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে ফুটবল সমর্থকদের জমায়েতে পুলিশি দমনের বিরুদ্ধে এবার জোরালো প্রতিবাদের দাবি জানালেন সুখেন্দুশেখর রায়।
রবিবার রাতে সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের সমর্থকদের একত্রে আবার প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যে ভাবে পুলিশ রবিবারের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের উপর লাঠিচার্জ করেছে, ফুটবল সমর্থকদের যে ভাবে আটক করা হয়েছে, তার বিরোধিতা করেছেন তৃণূল সাংসদ। সেই সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দুই প্রধানকে একত্রিত হয়ে গর্জে ওঠার ডাক দিয়েছেন তিনি।
I appeal to all football and sports lovers to protest unitedly against the arbitrary arrests of supporters of Mohunbagan and East Bengal in a peaceful and democratic manner. Jai Mohunbagan! Jai East Bengal!
— Sukhendu Sekhar Ray (@Sukhendusekhar) August 18, 2024
প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনায় শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন সুখেন্দুশেখর রায়। ১৪ অগাস্ট রাত দখলের কর্মসূচিতে তিনি যোগ দেবেন, নিজেই সেকথা সোশ্যা মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। নিজের মতো করে বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিবাদ কর্মসূচিও করেন তিনি। সেদিন দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কে নেতাজি মূর্তির সামনে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্নায় বসেছিলেন সুখেন্দুশেখর। পরে আরও বড় পজক্ষেপ করেন তিনি। আরজি কর কাণ্ডে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়ে সিবিআইকে চিঠি লিখেছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। শনিবার রাতে সোশ্যাল মাধ্যমে একটি পোস্ট করে নিজেই একথা জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। নিজের ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে একটি পোস্ট করেন সুখেন্দু শেখরবাবু। সেখানে তিনি বলছেন, “সিবিআইকে স্বচ্ছভাবে তদন্ত করতে হবে। প্রাক্তন অধ্যক্ষের পাশাপাশি সিপিকেও প্রয়োজনে গ্রেফতার করা উচিত। কে আত্মহত্যার তত্ত্ব প্রথম রটিয়েছিল? কেন হলের দেওয়াল ভাঙ্গা হলো? কে ‘রায়’-কে এত ক্ষমতা দিল? কেন ঘটনার তিনদিন পর ঘটনাস্থলে স্নিফার ডগ এনে তদন্ত শুরু হল! এরকম শয়ে শয়ে প্রশ্ন আছে। তাদের কাছে উত্তর চাওয়া হোক।”
এই ঘটনার পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে তলব করে লালবাজার। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ লালবাজারে হাজিরা দিতে বলা হয় তাঁকে। কিন্তু হঠাৎ তাঁকে তলব করা হল কেন? পুলিশ জানিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমস্ত পোস্ট করেন সুখেন্দু তাতে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। কিন্তু, বিকেলে লালবাজারে যাননি সুখেন্দুশেখর রায়। এর জেরে রাতেই ফের তাঁকে তলব করেছে কলকাতা পুলিশ। তবে তিনি যে তাঁর অবস্থান থেকেও নড়বেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন সুখেন্দুশেখর রায়।
— Sukhendu Sekhar Ray (@Sukhendusekhar) August 18, 2024
গতকাল রাতে তিনি ইঙ্গিতবহ ভাবে একটি পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়- ইউটিউবের একটি গানের লিঙ্ক। গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'আমি ভয় করব না'। সঙ্গে কোনও ক্যাপশন বা কিছু ছিল না। তবে মনে করা হচ্ছে, পুলিশি তলবের পরিপ্রেক্ষিতে বার্তা দিতেই এই পোস্ট করেছেন সুখেন্দুশেখর রায়।