এ শহরের বুকেই নিজেদের একটা 'লাল-নীল সংসার' পাতার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, ৮ অগাস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালের ভিতর ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনা এক লহমায় কেড়ে নেয় সেই স্বপ্ন। ধর্ষণ ও খুনের শিকার হওয়া তরুণী চিকিৎসককে হারিয়ে শোকে পাথর তাঁর 'বিশেষ বন্ধু'। এক বছর পরও নির্যাতিতার ন্যায়বিচারের দাবিতে যখন জনতা পথে, তিনি রয়ে গিয়েছেন সেই অন্তরালেই।
কেমন আছেন নির্যাতিতার 'বিশেষ বন্ধু'?
দুঃস্বপ্নের সেই রাত যেন আজও শেষ হয়নি নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের 'বিশেষ বন্ধু'-র জন্য। বছরখানেক ধরেই যেন থমকে রয়েছে তাঁর জীবন। মেয়ের সুবিচারের দাবিতে ফের পথে নেমেছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। শ্যামবাজারের রাত দখলের মঞ্চে মায়ের গলায় শোনা গেল সেই বন্ধুর কথা। নির্যাতিতার মা বলেন, 'কী দোষ ছিল ওই ছেলেটার বলতে পারেন? ওঁর জীবনটাও আমাদের মতোই হয়ে গিয়েছে।' গত বছর ৯ অগাস্টের একটি ফোন তাঁর গোটা জীবনটা তোলপাড় করে দিয়েছিল। মনের মধ্যে ওঠা সেই ঝড় থেমে এখন শুধুই প্রিয়জন হারানোর বেদনা।
নির্যাতিতার মতো তাঁর বাগদত্তাও পেশায় ডাক্তার। যে নারকীয় যন্ত্রণা পেয়ে বান্ধবীর মৃত্যু হয়েছে, তা ভেঙে দিয়ে গিয়েছে বন্ধুকেও।
আরজি করের নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা বলেন, ‘ছেলেটা বলে বাড়ি থেকে বেরোই, সারাদিন পেশেন্ট দেখি, আবার বাড়ি ফিরে আসি। কিছু ভালোলাগে না। পেশেন্ট দেখেই সব ভুলে থাকতে চাই।' সম্প্রতি সাইক্রিয়াট্রিতে গোল্ড মেডেল পেয়েছেন নির্যাতিতার বিশেষ এই বন্ধু। কিন্তু সেই আনন্দের মুহূর্ত কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেনি। ৩ দিন ধরে বাড়ির বাইরেই ছিল, সুখবর জানায়নি কাউকেই।
জানা গিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরে অবসাদে ভুগছেন নির্যাতিতার বন্ধু ওই চিকিৎসক। সব ভুলতে কাজেই শান্তি খোঁজার চেষ্টা করে চলেছেন নিরন্তর। গতানুগতিক জীবনটাই এখন তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মন বসে না কিছুতেই। নির্যাতিতার মায়ের মতে, 'এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। এত অন্যায়ের মাঝে দোষীর শাস্তি হলে অন্তত মানসিক ক্ষতে খানিক প্রলেপ পড়ত।'