প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মরচে ধরা কাঁচি ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ। আর এমন অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর প্রসূতি বিভাগের বিরুদ্ধে। সেই ভাঙা কাঁচির ছবি পোস্ট করে সরব হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই ঘটনায় এবার রিপোর্ট তলব করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
ভাঙা কাঁচির ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ জানিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। পোস্ট মারফত জানা গিয়েছে, এসএসকেএমে প্রসূতি বিভাগে রোগীর পেট কাটার সময় ঘটে বিপত্তি। অপারেশন থিয়েটারে সিজার করার সময় রোগীর পেটেই মরচে ধরা কাঁচি ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে ফের একবার প্রশ্নের মুখে রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রোগীদের সুরক্ষা। এসএসকেএমের অপারশেন থিয়েটারে থাকা অভিযোগকারী ওই চিকিৎসক জানান, নতুন বাক্সের সিল খুলে আনা হয় এই কাঁচি। এদিন সদ্যোজ্যাতকে পেট থেকে বের করার আগেই প্রসূতির অপারেশনের সময় কাঁচি ভেঙে যায়। তিনি বলেন, "আগেও হয়েছে এরকম ঘটনা। সরকার বলছে এক নম্বর পরিষেবা, কিন্তু এই কি তার নমুনা? ওটি করতে গিয়ে সরঞ্জাম ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙা টুকরো পেটে পড়লে বড়সড় ক্ষতি হতে পারত।" ঘটনামাত্রই বিষয়টি সিনিয়র চিকিৎসকদের নজরে আনেন তিনি। ওই চিকিৎসকের দাবি, সিস্টার ইনচার্জকে জানালে তিনি বলেন আরও এরকম সরঞ্জাম রয়েছে। নিম্নমানের আরও সরঞ্জাম এসেছে। কিন্তু একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সিস্টার ইনচার্জ নিজেই।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এসএসকেএম হাসপাতালের রিপোর্ট চেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। নবান্ন সূত্রের খবর, মরচে পড়া কাঁচি নজরে পড়তেই রিপ্লেস করা হয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্টে এসএসকেএম জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। তবে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, হাসপাতাল গুলিতে রোগী সুরক্ষা নিয়ে একাধিক বিষয়ে বারবার সরব জুনিয়র ডাক্তাররা। কিছুদিন আগেই আরজি কর হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রক্তমাখা গ্লাভস পাঠানোর অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা অভিযোগ তোলেন, ওই গ্লাভস পরে রোগীদের চিকিৎসা করা হলে নানা রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনাও থাকবে। তারপরেই রাজ্যের আরও এক নামজাদা হাসপাতাল এসএসকেএম-এ মরচে ধরা কাঁচিতে কাঁচি ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ উঠল।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের প্রথম দিকে খোদ আরজি কর হাসপাতালেই উঠেছিল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। সিল করা বাক্স থেকেই রক্তমাখা গ্লাভস মিলেছিল। জরুর বিভাগে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার সময় গ্লাভস ব্যবহার করতে গিয়ে রক্তমাখা গ্লাভস উদ্ধার করেন চিকিৎসকরা। আরজি করের রক্তমাখা গ্লাভস মেলার ঘটনায় কলেজের গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত চালাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। ওই গ্লাভস যারা সরবরাহ করেছে, তাদের মৌখিক বয়ানের পর লিখিত চাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, ওই দিন ওয়ার্ডে যারা ছিলেন তাদের বক্তব্যও চাওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজও।