কখনও রামমন্দির তো কখনও আবার অপারেশন সিঁদুর, সাম্প্রতিক অতীতে চমকে দেওয়ার মতো থিম নিয়ে হাজির হয়েছে লেবুতলা পার্কের সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার দুর্গাপুজো। সঙ্গে পিছু নিয়ে বিতর্কও। নিরাপত্তার ইস্যুতে এবছর পুজো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অতীতেও ঘটেছে এমনটাই। এত বিতর্ক যে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো নিয়ে সেই সন্তোষ মিত্র মানুষটি কে জানেন?
সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো এখন BJP নেতা সজল ঘোষের পুজো হিসেবেই লোকমুখে পরিচিত হয়ে উঠেছে। বরাবরই এই পুজোয় ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। তবে সাম্প্রতিক অতীতে এই পুজোয় মিশেছে খানিক রাজনীতির রঙও। অযোধ্যার রাম মন্দির করে বছর দু'য়ের আগে চমক দিয়েছিল এই পুজো কমিটি। এবার তাদের থিম 'অপারেশন সিঁদুর'। চোখ ধাঁধানো লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের খেলায় পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং তার পরবর্তী ভারতের প্রত্যাঘাতের দৃশ্য দেখে সাধারণ মানুষের রক্ত গরম হতে বাধ্য। কাতারে কাতারে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে যা দেখতে ছুটে আসছে। কিন্তু এই ভিড়ের আড়ালেই ইতিহাসের পাতায় লুকিয়ে রয়েছে এক তরুণ বিপ্লবীর আত্মত্যাগের কাহিনি। নাম সন্তোষ মিত্র।
কে এই সন্তোষ মিত্র?
পরাধীন ভারতে ১৫ অগাস্ট, ১৯০০ সালে জন্মেছিলেন তিনি। বেঁচেছিলেন মাত্র ৩০ বছর। তার মধ্যেই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অসামান্য অবদান রেখে গিয়েছেন সন্তোষ মিত্র।
১৯১৫ সালে তিনি হিন্দু স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯১৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। প্রেসিডেন্সি থেকে এরপর দর্শনে ফার্স্ট ক্লাস পান সন্তোষ মিত্র। পরে M.A এবং আইনও পাশ করেন। ততদিনে রাজনীতির প্রতি অমোঘ আকর্ষণ জন্মে গিয়েছে। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। জেল খাটতে হয়েছিল। পরবর্তীতে শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত হন। তার চেষ্টায় কলকাতায় জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে সোশ্যালিস্ট সম্মেলন হ.। চট্টগ্রাম আন্দোলনেও তাঁর ভূমিকা ছিল। গোপনে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন সন্তোষ মিত্র। ক্রমশ আকৃষ্ট হতে শুরু করেন চরমপন্থী আন্দোলনের প্রতি। ১৯২৩ সালে শাঁখারিটোলা হত্যা মামলা জড়িত থাকার অভিযোগে ফের গ্রেফতার করা হয়। ১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হিজলি জেলে সন্তোষ মিত্রকে গুলি করে হত্যা করে ব্রিটিশ পুলিশ।