'বিষধর সাপ' মন্তব্যে নতুন মাত্রা যোগ। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার। ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন তিনি। তাঁর কথায়, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যদি বিষধর সাপ হন, তাহলে তাঁকে ঝাঁপিতে ভরে ফেলবেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগেই। বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি বলেন, 'আমি বলেছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, আগে ছিল কেউটে এখন হয়েছে গোখরো। আমি বলেছি চন্দ্রবোরা হতে পারি। আপনারাও সাবধানে থাকবেন।' এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেও তৃণমূলের তরফেও একাধিক প্রতিক্রিয়া এসেছে। তারই রেশ ধরে মঙ্গলবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন শওকত মোল্লা।
শওকত মোল্লা মঙ্গলবার জয়নগরের প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডলের সমর্থনে এক সভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, 'অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচার ব্যবস্থার কলঙ্ক। বিচারপতির আসন থেকে যেভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাতে মানুষের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা উঠে যেতে বাধ্য। আর তিনি নিজেকে চন্দ্রবোরার থেকে বেশি বিষধর বলছেন। সেই বিষধর সাপকে কীভাবে ঝাঁপিতে ভরে ফেলতে হয় সেটা জানা আছে তৃণমূলের।'
নাম করেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে শওকত মোল্লা বলেন, 'উনি নিজেকে যতই বিষধর সাপ ভাবুন, মমতা বন্দোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর থেকে বড় ওঝা। ওঁকে কীভাবে ঝাঁপিতে পুরে ফেলতে হবে সেটা জানা আছে। আর তণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই তমলুকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ল্যাজে গোবরে করে দিয়েছেন।'
নওশাদ সিদ্দিকিকেও একহাত নেন শওকত। তাঁর কথায়, 'বিজেপিকে পিছনের দরজা দিয়ে এই রাজ্যে ঢোকানোর পথ প্রশস্ত করেছে ISF। বিজেপি মানুষকে ভয় দেখিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে ভোট করতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু তাদের সেই চক্রান্ত সফল হবে না। এই রাজ্যের ৪২ আসনের মধ্যে ৩৫ আসন তৃণমূল জিতবে। রাজ্যের মধ্যে ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সব থেকে বেশি ভোটে জিতবে। তারপরই সর্বাধিক মার্জিনে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল জিতবেন।'
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভোটে না দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর শুভানুধ্যায়ী হিসেবে এই অনুরোধ জানান তিনি।
কুণাল লেখেন, 'শ্রী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, পরিচয় থাকার সুবাদে একটি অনুরোধ। আপনি বিচারপতি থাকাকালীন বিতর্কিত। ইস্তফা দিয়ে প্রশ্নের মুখে। বিজেপিতে গিয়ে সমালোচিত। অনুরোধ, এখনও সময় আছে, ওদের বলে দিন, প্রার্থী হবেন না। তমলুকে তৃণমূল জিতবে। দু’মাস পর আপনার সব সম্মান নষ্ট হবে। যে আপনাকে তমলুক নিয়ে যাচ্ছে, সেও আপনাকে হারাবে। তার দলে অন্য বড় নাম সে সহ্য করতে পারে না, বাড়তে দেবে না। এখনও সময় আছে, আপনি নির্বাচনী ময়দান থেকে সরে থাকুন। পরাজয়ের দিনটি দেখা বড় কঠিন। শুভানুধ্যায়ী হিসেবে ভাবতে বললাম।'