সরকার বা শাসকদলের যেকোনও অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন প্রবীণ চিত্রকর শুভাপ্রসন্ন। ভাষা দিবসের দিনও উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে বক্তব্যও পেশ করেন। আর তারপর থেকেই বিতর্ক শুরু। গত মঙ্গলবার শুভাপ্রসন্ন তাঁর ভাষণে বাংলা ভাষায় ‘পানি’ বা ‘দাওয়াত’-এর মতো শব্দের অনুপ্রবেশ নিয়ে তাঁর উদ্বেগ এবং অনুযোগের কথা বলেছিলেন। মঞ্চ থেকে শুভাপ্রসন্নকে ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়েও মমতা বলেন, তিনি প্রবীণ শিল্পীর সঙ্গে একমত নন। ভাষার প্রবেশেই ভাষার ভান্ডার বৃদ্ধি হয়। তার অব্যবহিত পরে মুখ্যমন্ত্রী বা তৃণমূল এ নিয়ে কোনও কথা বলেনি।
বৃহস্পতিবার থেকে বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে তৃণমূলের মুখপাত্র এবং সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য। কুণাল বলেন, “একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে শুভাপ্রসন্ন একটু বাড়াবাড়ি করছেন। ভাষা দিবসের ঘটনা নিয়ে নতুন করে মমতা’দিকে ভুল প্রমাণ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দলের কারও উচিত ওঁর সঙ্গে কথা বলা।’’ এখানেই না থেমে কুণাল শুভাপ্রসন্নকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘জমি না কমিটির পদ লাগবে, এটা জেনে নিলেই ঝামেলা মিটে যাবে!”
বিষয়টিতে আজ, শুক্রবার 'আজতক বাংলা'কে শুভাপ্রসন্ন জানান, কুণালের কথায় তাঁর কিছু যায় আসে না। তিনি ওসব কথা ধর্তব্যের মধ্যেই আনছেন না। তিনি বলেন, 'মমতার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এগুলো কোনও ব্যাপার নয়। কুণালের অনেক সময়, আমার অত সময় নেই। তাই কুণালের কথা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আমি আমার বক্তব্যে এখনও অনড়।'
শাসকদল ঘনিষ্ঠ প্রবীন চিত্রকরের কথায়, 'বাংলা সাহিত্যে কোথাও পানি বা দাওয়াত শব্দ ব্যবহার হয় না। কিন্তু ইদানিং ওই দুই শব্দকে বাংলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওখানেই আমার আপত্তি। আমার অনেক মুসলমান সাহিত্যিক বন্ধু রয়েছেন, তাঁরাও বিষয়টিতে বিরক্ত। ওপার বাংলার লোকজনও পানি ও দাওয়াত বলতে চান না।'
বাংলা ভাষায় ‘পানি’ বা ‘দাওয়াত’-এর মতো শব্দের অনুপ্রবেশ নিয়ে তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাতে নিজের মত বদলাতে নারাজ শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। তাঁর কথায়, ‘আমি তো রাজনীতি করি না। আমি তৃণমূলের সদস্যও নই। নির্বাচনেও লড়ব না। আমি ছবি আঁকি। তাই কাউকে খুশি করার তাগিদ আমার নেই। আমি যেটাকে ঠিক মনে করেছি সেটাই বলেছি।’
আরও পড়ুন-কুন্তল বলছেন, 'গোপালের দ্বিতীয় বউ', রহস্যের নাম 'হৈমন্তী', কে ইনি?