SSC SCAM : India Today-র অন্তর্তদন্ত মিলে গেল ED-র চার্জশিটের সঙ্গে

অগাস্ট মাসের প্রথম দিকে পশ্চিমবঙ্গের চাকরির দুর্নীতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছিল India Today। একজন সাধারণ ক্যাব ড্রাইভার কীভাবে কোম্পানির ডিরেক্টর হয়েছিলেন, সেই তথ্য ফাঁস করা হয়েছিল। এর প্রায় মাস দেড়েক পর সেই ক্যাব ড্রাইভারকল্যাণ ধরের নাম চার্জশিটে ঢোকায় ED। চার্জশিটে উল্লেখ, কীভাবে সেই ক্যাব ড্রাইভারকে ব্যবহার করেছিলেন SSC দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়। তিনিই সেই ড্রাইভারকে একটি কোম্পানির ডিরেক্টরের পদ দিয়েছিলেন।

Advertisement
India Today-র অন্তর্তদন্ত মিলে গেল ED-র চার্জশিটের সঙ্গে ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • অগাস্ট মাসের প্রথম দিকে পশ্চিমবঙ্গের চাকরির দুর্নীতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছিল India Today
  • কজন সাধারণ ক্যাব ড্রাইভার কীভাবে কোম্পানির ডিরেক্টর হয়েছিলেন, সেই তথ্য ফাঁস করা হয়েছিল

অগাস্ট মাসের প্রথম দিকে পশ্চিমবঙ্গের চাকরির দুর্নীতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছিল India Today। একজন সাধারণ ক্যাব ড্রাইভার কীভাবে কোম্পানির ডিরেক্টর হয়েছিলেন, সেই তথ্য ফাঁস করা হয়েছিল। 

এর প্রায় মাস দেড়েক পর সেই ক্যাব ড্রাইভারকল্যাণ ধরের নাম চার্জশিটে ঢোকায় ED। চার্জশিটে উল্লেখ, কীভাবে সেই ক্যাব ড্রাইভারকে ব্যবহার করেছিলেন SSC দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়। তিনিই সেই ড্রাইভারকে একটি কোম্পানির ডিরেক্টরের পদ দিয়েছিলেন। অথচ সেই ব্যক্তি এই সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। 

কে এই কল্যাণ ধর, কীভাবে সে এই কাণ্ডে জড়াল- এই সব তথ্য উদ্ধারের জন্য (জুলাই মাসের শেষের দিক থেকে শুরু হয়েছিল এই তথ্য অনুসন্ধান) -India Today-এর বিশেষ তদন্তকারী দল কলকাতার কাছে বেলঘরিয়ায় কল্যাণ ধরের বাড়িতে যায়। সেখানে দেখা যায়, ওই ক্যাব ড্রাইভারের একটি মোটরসাইকেলও নেই। অথচ তাঁকেই  কোম্পানির কাগজপত্রে একজন বিত্তবান ব্যবসায়ী হিসেবে দেখানো হচ্ছে। 

 উদ্ধার হওয়া নথিতে কল্যাণ ধরকে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের তিনটি ফার্মের কো অর্ডিনেটর হিসেবে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, এই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকেই কোটি কোটি টাকার পাহাড় উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। তারপর অর্পিতাকে গ্রেফতারও করা হয়। 

এই অর্পিতা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনি এই দুর্নীতির প্রধান অভিযুক্ত। 

ED-র যে চার্জশিট, তা India Today-র অনুসন্ধানের সঙ্গে মিলেও গেছে।  সেখানে দেখানো হয়েছে, এই কল্যাণ ধর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ছোটো বোনের স্বামী। 

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে কল্যাণ ধর স্বীকার করেছেন, তাঁকে প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতনে কাজে রাখা হয়েছিল। তিনি ড্রাইভার ছিলেন। 

মৃন্ময় মালাকার
মৃন্ময় মালাকার

কল্যাণ ধরকে ধরকে সিম্বিওসিস মার্চেন্টস, সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্টের সহ-পরিচালক হিসাবে দেখানো হয়েছিল। এই তিনটি সংস্থা এখন এখন ইডি চার্জশিটে অভিযুক্ত।

ইন্ডিয়া টুডের তরফে জুলাইয়ের শেষের দিকে যখন কল্যাণ ধরের  প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলা হয়, তখনই তাঁরা নিশ্চিত করেন, কল্যাণ কোনও ব্যবসায়ী নন।

Advertisement

কল্যাণ ধরকে স্কুল জীবন থেকেই চেনেন এমন একজনের নাম সুবীর চক্রবর্তী। তিনি জানান, 'ধরের কোনও গাড়ি নেই। মোটরবাইকও নেই। আগে তিনি ট্যাক্সি চালক ছিলেন। এখন অর্পিতার গাড়ি চালান।'

 
ইতিমধ্যই ইন্ডিয়া টুডে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের শেল সংস্থাগুলির  তথাকথিত পরিচালকদের সঙ্গেও কথা বলেছে। যাঁরা ED-কে তাঁদের সাক্ষী দিয়েছে।

বিশ্বরূপ দাস
বিশ্বরূপ দাস

যেমন, মৃন্ময় মালাকার। তিনি ED-কে জানিয়েছেন, তাঁর বস তাঁকে অনন্ত টেক্সফ্যাব ফার্মে একজন পরিচালক হিসাবে সাইন অফ করতে বলেছিলেন৷ মালাকার বলেন, 'আমি সেই কোম্পানি সম্পর্কে কিছুই জানি না।'এই মৃন্ময় মালাকারকে একাধিক প্রশ্নও করা হয়েছিল। তিনি কী উত্তর দিয়েছিলেন দেখুন। 

 প্রশ্ন : আপনিই এর প্রথম ডিরেক্টর। আপনার স্বাক্ষর আছে।

 
উত্তর : 'স্বাক্ষরটি আমার। আমি অন্য কোম্পানির কর্মী। তারা আমাকে সই করতে বাধ্য করেছে।'

 
তাঁর প্রকৃত নিয়োগকর্তা, কমল সিং ভুটোরিয়া জানিয়েছেন, তিনি মুখোপাধ্যায়ের কোম্পানিতে পরিচালক হিসাবে তার কর্মীদের সাইন অফ করিয়েছিলেন। তৎকালীন মন্ত্রী চ্যাটার্জির নির্দেশে এগুলো করেছিলেন। 

কমল সিং ভুটোরিয়া
কমল সিং ভুটোরিয়া

 
তিনি জানান, 'স্যার, এটা একটা পাওয়ার লবি। তাঁরা কিছু বললে আমাদের করতে হবে। আমরা জানতাম না যে এই গল্পটি এত বড় হয়ে উঠবে।' ভুটোরিয়া, নিজে একটি কয়লা-ও-কোক ট্রেডিং কোম্পানির পরিচালক, ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন, ইডি তাঁর বিবৃতিকে সমর্থন করে। 'সাহেবকে বাধ্য করতে হবে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আমরাও কিছু সাহায্য আশা করি।'

একটি ব্যাঙ্কোয়েট হলের তত্ত্বাবধায়ক, বিশ্বরূপ দাস ব্যাখ্যা করেছিলেন যে তাকেও মুখার্জির কোম্পানিতে পরিচালক হিসাবে সাইন অফ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ইডি তার বয়ান রেকর্ড করেছে।

 তিনি বলেন, 'আমি আমার চাকরি হারাতে চাইনি তাই যেখানেই বলা হবে সেখানে সাইন অফ করব। আমার বাড়িটা দেখতে পারেন। এটা কত খারাপ। এটি কোনও ডিরেক্টরের বাড়ি নয়।' ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছিলেন। 

POST A COMMENT
Advertisement