রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আপাতত ২৫ শতাংশ বকেয়া মহার্ঘভাতা দিয়ে দিতে হবে। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। চার সপ্তাহের মধ্যে সকল কর্মচারীকে এই পরিমাণ DA দিতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছেন এমনটাই। অগাস্ট মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই পরিমাণ DA দিতে গেলে রাজ্য সরকারকে কত টাকা খরচ করতে হবে কোষাগার থেকে? বেতন কত দাঁড়াবে? হিসেব কষতে ব্যস্ত সরকারি কর্মীরা।
মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, 'সিম্পল হিসেব। ১৯৮২-কে বেস ইয়ার ধরে ৫৩৬-কে অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী ডিএ হিসেব করতে হবে।'
এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন দিতে গেলে ৪০ হাজার কোটি টাকা লাগবে রাজ্য সরকারের। এমনটাই জানানো হয়েছে আদালতে। ৫০ শতাংশ বকেয়া DA দিতে গেলে ২০ হাজার কোটি টাকা লাগবে এবং ২৫ শতাংশ বকেয়া DA দিতে ১০ হাজার কোটি টাকা লাগবে বলেও সরকার পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানিয়েছেন। এই বিরাট আর্থিক বোঝায় রাজ্যের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন আইনজীবী। কিন্তু আইনজীবীর আবেদনে সাড়া দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত।
এ প্রসঙ্গে ফিরদৌস শামিম বলেন, 'রোপা রুলস ২০০৯ লাগু হয়েছিল ২০০৬ সাল থেকে। যেদিন সেটি লাগু হয় সেদিনই আরও দুটো মেমো দেওয়া হয়। যেখানে বলা হয় ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত কোনও এরিয়ার দেওয়া হবে না। কিন্তু তার পর থেকে দিতে হবে। তার পর থেকে কত হারে দেওয়া হবে সেটিও একটি মেমোতে বলা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে আর অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আর ডিএ পাননি সরকারি কর্মচারীরা। সেই জন্যই তাঁরা মামলা করেছিলেন। অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পেলে তা কত টাকায় দাঁড়াত, সেটিও আমরা হিসেব করে রেখেছি। বারবার সেই হিসেব আদালত এবং স্যাটের কাছে আমরা দেখিয়েছি।'
কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা যে হারে ডিএ পান, সেই হারে ডিএ দেওয়ার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাধিক সংগঠন। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার। কেন্দ্রের দেওয়া হারে তা রাজ্যকে দিতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার। ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রথম বার ডিএ মামলা ওঠে দেশের শীর্ষ আদালতে। এর পর থেকে গত কয়েক বছরে বারবার পিছিয়েছে ডিএ মামলার শুনানি। অবশেষে শুক্রবার, ১৬ মে, অন্তর্বর্তী রায় দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।