শুভেন্দু অধিকারী।-ফাইল ছবিসল্টলেক স্টেডিয়ামের তাণ্ডব নিয়ে এবার বড় ঘোষণা করল বিজেপি। বুধবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানালেন, যুবভারতী কাণ্ডে যাঁদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাঁদের সকলকে আইনি সহায়তা দেবে বিজেপি। দর্শকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর এবং গ্রেফতারির সিদ্ধান্তের কড়া প্রতিবাদ জানান তিনি। শুভেন্দুর কথায়, 'ধৃতদের সম্পূর্ণ লিগাল সাপোর্ট দেবে বিজেপি। আমাদের আইনজীবীরা এই তথাকথিত ভুয়ো এফআইআরগুলিতে স্থগিতাদেশ চাইবেন। জামিন করানো থেকে শুরু করে আইনি লড়াই, সব দিকেই পাশে থাকবে বিজেপি। আমরা এটা নিয়ে একটা জনস্বার্থ মামলা করেছি।'
মেসি কাণ্ড নিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'ক্রীড়ামন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছেন। তিনি বলেন যেসব অনুরাগীদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা কোনও অপরাধ করেননি, তাঁরা টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছেন তাঁরা যোগ্য। তাঁদের অনেকেই মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করেন, উচ্চ শিক্ষিত। অথচ যাঁরা এই প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি করল তাদের কিছু করা হয়নি। ২৫ কোটি টাকা এডভ্যান্স কে করেছে? এতে পুরো দলটা যুক্ত।'
এর মধ্যেই যুবভারতীতে ভাঙচুরের ঘটনায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রূপক মণ্ডল। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাঁকে শনাক্ত করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, রূপকের বাড়ি ইএম বাইপাস সংলগ্ন চিংড়িঘাটা এলাকায়। এই নিয়ে যুবভারতী কাণ্ডে গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ছয়। পাশাপাশি, বুধবার সকালে রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তদন্তকারী দলের চার জন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন।
উল্লেখ্য, ফুটবল তারকা লিয়োনেল মেসির কলকাতা সফরকে ঘিরেই এই উত্তেজনার সূত্রপাত। গত শনিবার যুবভারতীতে চরম বিশৃঙ্খলা ও তাণ্ডবের ছবি সামনে আসে। অভিযোগ, চড়া দামে টিকিট কেটেও বহু দর্শক মেসিকে ঠিকমতো দেখতে পাননি। প্রায় ২০ মিনিট মাঠে ছিলেন মেসি, সুয়ারেজ় ও দে পল। সেই সময় তাঁদের ঘিরে মাঠে একটি বড় জটলা তৈরি হয়, যেখানে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন। এই জটলার কারণে গ্যালারি থেকে দর্শকদের একাংশ মেসিদের প্রায় দেখতেই পাননি।
মেসিরা স্টেডিয়াম ছাড়ার পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে গ্যালারিতে হোর্ডিং ছেঁড়া শুরু হয়, এরপর শুরু হয় বোতলবৃষ্টি। গ্যালারি থেকে মাঠের দিকে একের পর এক বোতল ছোড়া হয়, ভাঙচুর করা হয় চেয়ার। শেষ পর্যন্ত ফেন্সিং ভেঙে ক্ষুব্ধ জনতা মাঠে নেমে পড়ে। এই ঘটনার পর স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে বিধাননগর পুলিশ। যুবভারতী কাণ্ড ঘিরে এখন রাজ্য রাজনীতিতেও চাপানউতোর তীব্র আকার নিয়েছে।