মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে বিধানসভায় তাঁর ঘরে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। 'ভাই' বলে বিরোধী দলনেতাকে সম্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার নিজের ঘরে শুভেন্দুকে ডেকে পাঠান তিনি। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে যান বিরোধী দলনেতা। পরে তিনি বলেন,'৩-৪ মিনিট সৌজন্য বিনিময় হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই। রাজ্যের স্বার্থে বিধানসভায় শাসক-বিরোধী যখনই সমন্বয় চাইবেন পাশে থাকব।'
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কয়েকটি দাবিদাওয়ায় রেখেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন,'পিএসি চেয়ারম্যান বিরোধীদের দিতে হবে। ৯টি স্ট্যান্ডিং ও হাউজ কমিটি দিয়েছেন। ২০১৬ সালে সংযুক্ত বিরোধীদের সংখ্যা যা ছিল এবার একা বিজেপির সেটা। গতবার ১৫টা দিলে এবার ৯টি দিয়েছেন কেন?'
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় তাদের দলের সাংসদ ও বিধায়কদের ডাকা হয় না বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সে কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়,'প্রশাসনিক সভায় কেবল তৃণমূল বিধায়কদের ডাকেন। আমাদের বিধায়করা এলাকার সমস্যার কথা বলতে পারেন না। উনি বললেন আমি তো ডাকি। অধীর চৌধুরীকে নাকি ডেকেছিলেন! সেটা অধীরবাবু বলতে পারবেন। এত বিধায়ক থাকলেও কাউকে পেলেন না, বিশ্বজিৎ ও কৃষ্ণকল্যাণী ডেকে আমার পাশে বসালেন।'
সেই সঙ্গে বিরোধীরা সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছে বলে মমতার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়,'আমি আগেই বলেছি ভোটের সময় রাজনীতি। আমরা টাকা বন্ধ করতে বলিনি। ১০০ দিনের দুর্নীতি বন্ধ করতে বলেছি। বলেছি, আসল প্রকল্পের নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা লিখতে হবে।'
মমতা-শুভেন্দু সৌজন্য সাক্ষাতের নেপথ্যে সেটিংতত্ত্ব খুঁজে পাচ্ছে সিপিএম। দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন,'শুভেন্দু অধিকারী আজকের মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়েছেন। কাকের ঘরে কোকিল না কোকিল এর ঘরে কাক? দুইয়ে মিলেমিশে এক। আমরা বরাবরই বলছি। শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। হয়তো বরফ গলল। এটা কি দিল্লির চাপ? মোদীজি-অমিত শাহ বলছেন,আমরা যেমন ভিতরে-ভিতরে আছি তোমরাও থাকো, ডেকে নাও শুভেন্ কে? আমি জানিনা। বিরোধী দলনেতা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাবেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধী দলনেতাকে নেতাকে ডাকবেন, এটাই স্বাভাবিক ছিল। এটা কোনও অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এটাকে অস্বাভাবিক করে দিয়েছে বলেই এটা এখন খবর হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- মুখোমুখি মমতা-শুভেন্দু, মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে প্রথমবার বিরোধী দলনেতা