'ইলেক্টরাল বন্ডে বৈধভাবে অবৈধ সংস্থাগুলির থেকে যে ১,৬০০ কোটি টাকা নিয়েছেন, সেটা ফেরত দিন,' মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বার্তা শুভেন্দু অধিকারীর। বৃহস্পতিবার পুলিশের নিচুতলার একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'নিচুতলার পুলিশকর্মীরা কয়লাচুরি, বালিচুরি করছে'। তারপরেই বারাবনি থানার আইসি মনোরঞ্জন মণ্ডলকে সাসপেন্ড করা হয়। শুক্রবার সকালে এই নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানালেন বিজেপি নেতা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে 'ভোটের আগে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা' বলে কটাক্ষ করেন।
শুভেন্দুর বক্তব্য
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আক্রমণ শানান শুভেন্দু। বলেন, 'কয়লা, পাথর, বালি, মূলত এই ধরণের জিনিস যাঁরা কারবার করেন তাঁদের দিয়ে অবৈধভাবে এই বন্ডগুলো(নির্বাচনী) বিলিয়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস মানেই সবাই জানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়... স্বাভাবিকভাবেই তিনি তো বৈধভাবেই এদের থেকে টাকা নিয়েছেন।' ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম গঠন করে এর তদন্তের দাবি তোলেন শুভেন্দু।
তিনি বলেন, 'এটা বলে উনি তো নিজের উপরেই অনাস্থা প্রকাশ করলেন। প্রমাণহীন টাকা ছেড়ে দিলাম, ইলেক্টোরাল বন্ডেই তৃণমূল ১,৬০০ কোটি টাকা নিয়েছে। ফলে উনি কাকে কার বিরুদ্ধে বলছেন? এটা তো স্ববিরোধিতা।'
শুভেন্দু বলেন, 'পুলিশ কর্তারা, কিছু আমলা দিয়ে বিভিন্ন নির্বাচনী বন্ড থেকে টাকা নিয়েছে। যদি বৈধভাবে টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা ফেরত দিন। এই লটারিতে যে এত টাকা নগদ পেল ইডি, সেই ব্যাপারে কোনও উল্লেখ নেই। সেই লটারি তো ধরা পড়েছে। যুবসমাজকে এবং দৈনিক আয় করা প্রান্তিক মানুষ, যাঁরা হয় তো দিনে ৩০০ টাকা আয় করেন, তাঁদের সর্বনাশ হয়েছে ডিয়ার লটারিতে, সর্বনাশ হয়েছে মদের পাউচে।'
'আগামী বছর ভোটের আগে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা'
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, 'আগামী বছর ভোটের আগে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।'
তিনি বলেন, '২০ লক্ষ করে সাইকেল পাচ্ছে জয় বাংলাতে। এই টাকা বেশিরভাগটাই কেন্দ্রের। ৭,৯৪৮ টাকায় আপনি এক-একটা সাইকেল কিনেছেন। আপনি এমন কোনও জায়গা পাবেন না... শুধু ওসব বালি-টালি, কয়লা-টয়লা বলে নয়, এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে আপনার প্রচ্ছন্ন মদতে, আপনার দল, আপনার পরিচিত, আপনার চেনা কেউ দুর্নীতি করছে না। আমার সব তথ্য আছে। আমি সবটাই বলতে পারি।'
'১,৬০০ কোটি টাকা ফেরত দিন'
শুভেন্দু আরও বলেন, 'আগে ইলেক্টোরাল বন্ডে আপনি বৈধভাবে যে ১,৬০০ কোটি টাকা নিয়েছেন বিভিন্ন অবৈধ সংস্থা থেকে, লটারি থেকে, সমস্ত বৈধ টাকা নিয়েছেন, সেটা ফেরত দিয়ে এই যে আপনি সাড়ে ১৩ বছর পর নতুন করে জেগে উঠেছেন, সেটা করে দেখান।'
মুখ্যমন্ত্রী কী বলেছিলেন?
বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, 'নিচুতলার পুলিশকর্মীরা কয়লাচুরি, বালিচুরি করছে, বদনাম হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের। পলিটিকাল নেতারা ৫ টাকা নিলে বলে ৫০০ টাকা খেয়েছে। তবে তারা জনগণের কথা ভাবে, দায়বদ্ধতা থাকে। কিন্তু নীচুতলার একাংশ পুলিশ রাজ্য সরকারকে ভালোবাসে না। পুলিশ আর CISF-এর কিছু লোক চুরি করছে। টাকা খেয়ে বালি-কয়লা-সিমেন্ট চুরি করছে। এই জায়গাগুলি টেন্ডার করে দাও। দুর্নীতি করলে আমি বাঁচাব না। আমি সিআইডির খোলনলচে বদলে দেব। দালালরা সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে, আর ভাগ দিচ্ছে অনেককে।'