scorecardresearch
 

Ramakrishna Mission New President : রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের নতুন অধ্যক্ষ স্বামী গৌতমানন্দ মহারাজ

রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ। রামকৃষ্ণ মঠের অছি পরিষদ ও পরিচালন সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement
swami gautamanandaji maharaj swami gautamanandaji maharaj
হাইলাইটস
  • রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ
  • রামকৃষ্ণ মঠের অছি পরিষদ ও পরিচালন সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে

রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ।  রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের তরফে জানানো হয়, রামকৃষ্ণ মঠের অছি পরিষদ ও পরিচালন সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজের মৃত্যু হয়। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ। তিনি এর আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি স্মরণানন্দজির মৃত্যুর পর অন্তর্বতীকালীন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এবার স্থায়িভাবে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হল। 

রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের তরফে যে প্রেস রিলিজ প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে, স্বামী গৌতমানন্দজীর জন্ম কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে ১৯২৯ সালে। তবে তাঁর পূর্বপুরুষেরা তামিলনাডুতে বসবাস করতেন। যৌবনে তিনি রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের অন্যতম সহ-সজ্ঞাধ্যক্ষ এবং বেঙ্গালুরু মঠের তৎকালীন অধ্যক্ষ স্বামী যতীশ্বরানন্দজী মহারাজের সংস্পর্শে আসেন। ১৯৫৫ সালে স্বামী যতীশ্বরানন্দজীর কাছ থেকে তিনি মন্ত্রদীক্ষা লাভ করেন। পরের বছর নিজ গুরুর নির্দেশে তিনি রামকৃষ্ণ সঙ্ঘে যোগদান করেন দিল্লী আশ্রমে। 

সেখান থেকে রামকৃষ্ণ মিশন দিল্লিতে ছয় বছর অবস্থান করে বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নিরত ছিলেন। ১৯৬২ সালে স্বামী বিশুদ্ধানন্দজী মহারাজের কাছ থেকে তিনি ব্রহ্মচর্য্য দীক্ষা লাভ করেন এবং ১৯৬৬ সালে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের দশম সঙ্ঘাধ্যক্ষ স্বামী বীরেশ্বরানন্দজী মহারাজের কাছ থেকে সন্ন্যাস-দীক্ষা লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি দিল্লী থেকে সোহরা (পূর্বে চেরাপুঞ্জি) আশ্রমে প্রেরিত হন। কয়েক বছর সেখানে সেবা করার পর তাঁকে মুম্বই আশ্রমে পাঠানো হয়। এই কেন্দ্রগুলিতে থাকাকালীন তিনি নানা সেবাকাজে অংশগ্রহণ করেছেন। 

আরও পড়ুন

১৯৭৬ সালে অরুণাচল প্রদেশের আদিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত আলো (পূর্বে আলং) কেন্দ্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন গৌতমানন্দজী। সুদীর্ঘ ১৩ বছর তিনি সেখানে আদিবাসীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে আলং কেন্দ্রটি নানা দিক দিয়ে উন্নত হয়ে জাতীয় স্তরে খ্যাতি লাভ করে। পরবর্তীকালে তিনি স্বল্পকাল ছত্তীসগঢ়ে রায়পুর ও নারায়ণপুর আশ্রমের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯০ সালে গৌতমানন্দজী রামকৃষ্ণ মঠের অছি পরিষদ ও রামকৃষ্ণ মিশনের পরিচালন সমিতির সদস্য নিযুক্ত হন। প্রায় তিন বছর তিনি বেলুড় মঠের নিকটবর্তী কেন্দ্র সারদাপীঠের সম্পাদক ছিলেন।

Advertisement

১৯৯৫-এর এপ্রিল মাসে গৌতমানন্দজী তামিলনাডুতে অবস্থিত ঐতিহ্যমণ্ডিত চেন্নাই মঠের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সুদীর্ঘ তিন দশক ধরে তিনি ঐ পদে আসীন ছিলেন এবং তাঁর নেতৃত্বে সেখানকার সেবাকাজের সম্প্রসারণ হয় এবং আশ্রমের প্রভূত উন্নতি হয়। এ ছাড়াও তামিলনাডুতে অবস্থিত রামকৃষ্ণ- বিবেকানন্দ ভাবপ্রচার পরিষদের অন্তর্গত বিভিন্ন আশ্রমগুলিকে তিনি নির্দেশাদি দিয়ে সাহায্য করেছেন। তাঁর প্রেরণায় পণ্ডিচেরি (কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল), অন্ধ্রপ্রদেশে কাডাপা ও তিরুপতি, তামিলনাডুতে তাঞ্জাভুর, বিষ্ণুপুরম, চেঙ্গম, থিরুম্মুকুডল প্রভৃতি স্থানে মঠ ও মিশনের নতুন কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।
রামকৃষ্ণ মঠের অছি পরিষদের অনুমোদনে ২০১২ সাল থেকে গৌতমানন্দজী মন্ত্রদীক্ষা দান করা শুরু করেন। এর কয়েক বছর পর ২০১৭ সালে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অন্যতম সহ-সঙ্ঘাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।


গৌতমানন্দজী বিভিন্ন সময়ে মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্র ও অন্যান্য আশ্রমগুলি পরিদর্শন করেন এবং দেশে-বিদেশে নানা প্রান্তে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ভাবধারা ও বেদান্তের বাণী অগণিত মানুষের মধ্যে প্রচার করেছেন। এ ছাড়াও তিনি বহু সংখ্যক অধ্যাত্মপিপাসুকে মন্ত্রদীক্ষা দান করেছেন। মঠ ও মিশনের পত্রিকাগুলিতে মহারাজের লেখা প্রবন্ধগুলি পড়লে তাঁর মননশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। পরিণত বয়সেও পূজনীয় মহারাজের সুস্বাস্থ্য, তীক্ষ্ণ ধীশক্তি এবং প্রফুল্ল ব্যক্তিত্ব তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রেরণাদায়ী।

Advertisement