কলকাতায় ফের ভাইরাল সংক্রমণের দাপট শুরু হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সোয়াইন ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কনজাংটিভাইটিস, কোভিড, ডেঙ্গি এবং ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড় শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাস, বিশেষত এইচ ওয়ান এন ওয়ান এবং এইচ থ্রি এন টু, ভাইরালের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসের প্রভাব
চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, বহু মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। ১০২ বা ১০৩ ডিগ্রি জ্বর ও গায়ে অসহ্য ব্যথা নিয়ে তাঁরা হাসপাতালে আসছেন। বর্ষাকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা স্বাভাবিক হলেও এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভয়াবহ। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ৫ বছরের কম বয়সী শিশু, ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক, গর্ভবতী মহিলা এবং যাদের কো-মর্বিডিটি আছে, তাদের অবশ্যই ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া উচিত।
বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জানালেন, বেশিরভাগ শিশুই শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আসছে। এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইনফ্লুয়েঞ্জা পজেটিভ। এছাড়াও কয়েকটি অ্যাডেনোভাইরাস সংক্রমণের ঘটনাও পাওয়া গেছে। কিছু ভাইরাল ডায়েরিয়ার রোগীও আসছেন। বেশিরভাগ রোগীরই শ্বাসকষ্ট ও জ্বর হচ্ছে।
কনজাংটিভাইটিসের দাপট
গত সপ্তাহে বহু মানুষ কনজাংটিভাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাকে জয় বাংলাও বলা হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, চোখের প্রদাহ, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা এবং চোখ থেকে জল পড়া সাধারণ উপসর্গ। আক্রান্ত হলে স্কুল এবং অফিসে যাওয়া এড়ানো উচিত। এবং সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সাঁতার কাটা বন্ধ করা উচিত। এই সংক্রমণ খুবই ছোঁয়াচে।
ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত
এতসব ভাইরাল সংক্রমণের মধ্যে ডেঙ্গিও বাড়ছে। কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানিয়েছে যে, ২১ জুলাই পর্যন্ত সাত দিনে প্রায় ৪০টি ডেঙ্গুর ঘটনা ঘটেছে। এই বছরের জানুয়ারি থেকে কলকাতায় মোট ১৮৪টি ডেঙ্গুর ঘটনা ঘটেছে।
পরামর্শ ও সতর্কতা
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় টিকা গ্রহণ করতে হবে।