প্রশাসনিক ঘোষণা হয়েছিল আগেই। সেই মতো শুরু হয়েছিল পুলিশি তৎপরতাও। অবশেষে রবিবারই বদলে ফেলা হল থানার সাইনবোর্ডও। এদিন ভাঙড় থানার গেট থেকে খুলে ফেলা হল পুরনো সাইনবোর্ড। বদলে লাগানো হল নতুন সাইনবোর্ড। যেখানে লেখা রয়েছে ভাঙড় ডিভিশন, কলকাতা পুলিশ। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে যে ধরনের হিংসার ঘটনা ঘটেছে ভাঙড়ে, তারপরই এই এলাকাকে কলকাতা পুলিশের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সরকারিভাবে গত কয়েকদিন আগেই কলকাতা পুলিশের আওতায় এসেছে ভাঙড়। এই প্রসঙ্গে নবান্ন থেকে এক নির্দেশিকাও প্রকাশিত হয়েছে। সেই নির্দেশিকা অনুসারে, কলকাতা পুলিশের দশম ডিভিশন ভাঙড়। সেই ডিভিশনের আওতায় থাকছে ৮টি থানা। থানাগুলি হল হাতিশালা, পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, মাধবপুর, চন্দনেশ্বর, বোদরা এবং ভাঙড়। এছাড়াও ওই ডিভিশনের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে তৈরি হচ্ছে নয়া ভাঙড় ট্রাফিক গার্ড। ফোর্স নিয়েও সেই নির্দেশিকায় তথ্য দেওয়া হয়েছে। ডিভিশনে ২ জন ডিসি পদমর্যাদা অফিসারের আওতায় থাকছেন ৪ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। পাশাপাশি প্রত্যেক থানায় থাকছেন ওসি, অতিরিক্ত ওসি, ১০ জন এসআই, ৪ জন মহিলা সাব ইন্সপেক্টর, ২ জন সার্জেন্ট, ১২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর, ৩ জন মহিলা এএসআই, ৮০ জন কনস্টেবল, ৩০ জন মহিলা কনস্টেবল ও ১২ জন গাড়ি চালক।
অপরদিকে, এদিকে ইস্ট ডিভিশনের আওতায় থাকলেও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স বা কেএলসি থানাতেও এই একই সংখ্যক পুলিশ থাকছে। এর পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগের জন্য পৃথকভাবে ৯৩ জন ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের জন্য ৩৬ জন পুলিশকর্মী এবং আধিকারিক নিয়োগ করছে লালবাজার। লালবাজার সূত্রে খবর, এর জন্য ৪ জন ইন্সপেক্টরকে আটটি থানার পরিকাঠামো তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামোগত কাজ শেষ হলেই থানাগুলি উদ্বোধন করা হবে বলে খবর।
এখানে উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই আলিপুরের বডিগার্ড লাইন্স-এ একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি ভাঙড়ে কলকাতা পুলিশের আলাদা ডিভিশন করার নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত ভাঙড়। তৃণমূল এবং আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মৃত্যুও হয় বেশ কয়েক জনের। তার পরেই বিভিন্ন মহলে ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জোর পায়। ভাঙড় কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পর পরিস্থিতি আদৌও ঠিক হয় কিনা এখন সেটাই দেখার।