Kalyan Banerjee: কল্যাণকে কি ছেঁটেই ফেলল TMC? বাড়াবাড়ি বুঝেই 'অভিমানী'

রাজনীতিতে উত্থান ও পতন, দুটোই ঠুনকো। মঙ্গলবারই কল্যাণের ইস্তফা গ্রহণ করে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের জায়গায় লোকসভায় চিফ হুইপের দায়িত্ব পেলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। কল্যাণ জানিয়েছেন, লোকসভায় দলের সহকারী নেতা কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে তিনি নাকি বলেছেন, তাঁর জন্য যেন লোকসভায় পিছনের দিকের একটি আসন নির্দিষ্ট করা হয়।

Advertisement
কল্যাণকে কি ছেঁটেই ফেলল TMC? বাড়াবাড়ি বুঝেই 'অভিমানী'কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শশী থারুরের ব্যক্তিগত আড্ডা সংসদ চত্বরে-- পিটিআই
হাইলাইটস
  • ইস্তফা দিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন?
  • রাজনীতিতে উত্থান ও পতন, দুটোই ঠুনকো
  • কল্যাণের প্রশংসা করছেন শুভেন্দু

সবটা ঘটে গেল মাত্র ২৪ ঘণ্টায়। হ্যাঁ, আপাত দৃষ্টিতে। কিন্তু ঘটনার প্রেক্ষাপট তৈরি কিন্তু ২৪ ঘণ্টায় নয়। কয়েক বছর ধরে। রাজনীতিতে উত্থান ভীষণ ঠুনকো। আবার পতনও। কথা হচ্ছে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলর কংগ্রেসে শ্রীরামপুরের সাংসদ ছাড়াও কল্যাণের আরেকটি পরিচয় হল, দুঁদে আইনজীবী। রাজ্য সরকারের একাধিক মামলা লড়েন। এহেন কল্যাণকে কি শেষমেশ প্রায় ছেঁটেই ফেলল তৃণমূল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন? তুমি যতই গুরুত্বপূর্ণ মামলা লড়ো, লোকসভায় ভাল ভাষণ দাও, কেউকেটা নও। তোমাকে ছাড়াও সংসদে তৃণমূলের অবস্থান ও কার্যকলাপ ঠিক থাকবে। আবার দেখুন, কল্যাণ যখন তৃণমূলে কোণঠাসা, তখন আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শ্রীরামপুরের সাংসদের প্রশংসা করছেন। 


কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে কল্যাণের গুস্সা নতুন নয়। দুজনের ঝগড়া রাজনীতির নবীনরাও জানেন। কল্যাণ অতীতে বারবার মহুয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। প্রকাশ্যে মহুয়াকে ভেঙিয়েছেন। কয়েক দিন আগে তো বলেই দিলেন, 'আমি না থাকলে লোকসভায় কী করে কাজ করে দেখব। OBC, SSC মামলা লড়ব। সংসদের কাজও করব।' আবার তৃণমূলের সাংসদদের অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কল্যাণের ভূমিকা নিয়ে। তাঁদের অনেকের দাবি, লোকসভায় কোনও বিতর্কে তাঁদের বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য কল্যাণকে বারবার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি৷ 

ইস্তফা দিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন?

(Mahua Moitra clash) আবার দেখুন, কল্যাণ কিন্তু দু পা এগিয়ে এক পা পিছিয়েছেন। সোমবার কল্যাণ লোকসভায় দলের মুখ্য সচেতক পদে ইস্তফা দিলেন। শ্রীরামপুরের সাংসদ বললেন, ‘মমতাদি অভিযোগ করেছেন লোকসভায় সমন্বয় ঠিক মতো হচ্ছে না, ফলে আঙুল তো আমার দিকে তোলা হচ্ছে। তাই আমি ছেড়ে দিলাম। শুধু তাই নয়, কল্যাণ অভিযোগের সুরে আরও বলেন, দিদি বলছেন ঝগড়া করছে৷ যাঁরা আমাকে গালাগাল দেয় আমি কি সহ্য করব? দলকে জানিয়েছি, দল আমাকেই উল্টে দায়ী করছে। প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’  তারপর কী মনে হয়েছিল, একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন? হঠাত্‍ রাতে এক্স হ্যান্ডেলে লোকসভার পুরনো ভিডিও পোস্ট করলেন, মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়িয়ে কীভাবে ২০২৩ সালে তিনি লোকসভায় লড়াই করেছিলেন, তার ব্যাখ্যা দিলেন। 

Advertisement

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র -- ফাইল ছবি
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র -- ফাইল ছবি

রাজনীতিতে উত্থান ও পতন, দুটোই ঠুনকো

কিন্তু ওই যে, রাজনীতিতে উত্থান ও পতন, দুটোই ঠুনকো। মঙ্গলবারই কল্যাণের ইস্তফা গ্রহণ করে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের জায়গায় লোকসভায় চিফ হুইপের দায়িত্ব পেলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Abhishek Banerjee faction)। কল্যাণ জানিয়েছেন, লোকসভায় দলের সহকারী নেতা কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে তিনি নাকি বলেছেন, তাঁর জন্য যেন লোকসভায় পিছনের দিকের একটি আসন নির্দিষ্ট করা হয়। কল্যাণের অভিমানী মন্তব্য, ‘আমার দরকার ফুরিয়ে গিয়েছে। এ বার দিদিই দল চালান।’   

কল্যাণের মুখের ভাষা 

বস্তুত, কল্যাণের রাজনৈতিক জীবনে সংখ্যাতীত বিতর্ক। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুরে কল্যাণের বিরুদ্ধে বামেদের প্রার্থী ছিলেন দীপ্সিতা ধর। দীপ্সিতা সম্পর্কে কল্যাণের নানা মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কল্যাণের আচরণ ও মন্তব্য সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মহুয়া বলেছিলেন, ‘শুয়োরের বাচ্চাদের সঙ্গে কখনও লড়াই করতে নেই। সে চাইবে লড়াই করতে। কিন্তু আপনি করলে নোংরাটা আপনার গায়েও লাগবে।’

কল্যাণের প্রশংসা করছেন শুভেন্দু

কল্যাণ যখন দলে কোণঠাসা, তখন হঠাত্‍ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রশংসা করছেন শ্রীরামপুরের সাংসদের। বললেন, 'কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষিত মানুষ। ২০১১ সালের আগে সিপিএমের সঙ্গে যে সংঘর্ষ ছিল, তাতে কল্যাণের সক্রিয় ভূমিকা ছিল।' 

রাজনীতি ছেড়ে দেবেন?

বস্তুত, অতীতে বঙ্গ রাজনীতিতে 'রাজনীতি ছেড়ে দেব' কথাটি বহু নেতা বলেছেন। এমনকী ২০২১ সালে তৃণমূল বা বিজেপি ছাড়ার আগেও অনেকে 'প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব' বলেছিলেন। কল্যাণও বললেন। দেখা যাক। 
 

POST A COMMENT
Advertisement