
কখনও 'রক্তচরিত' আবার কখনও 'জানা পড়েগা শ্মশান'। মাথায় জটা, গোটা গায়ে ভস্ম আর গলায় খুলির মালা পড়ে নৃত্য প্রদর্শন করছেন একদল। যা দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন দক্ষিণ কলকাতার জনপ্রিয় ত্রিধারা সম্মিলনীর দুর্গাপুজোয়। আক্ষরিক অর্থে এমন 'তাণ্ডব নৃত্য' আগে কখনও দেখেনি শহর কলকাতা। দুর্গাপুজোর 'চলো ফিরি' থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিবের তাণ্ডব লীলা ফুটিয়ে তুলে এবারের পুজোয় ত্রিধারার বিশেষ আকর্ষণ এই অঘোরী নৃত্য। আর সেটা ঘিরেই যত বিতর্কের সূত্রপাত। চতুর্থীর রাত থেকে শুরু হওয়া এই লাইভ পারফর্ম্যান্স ক্রমশই ভিড় টানতে শুরু করে। ভিড়ের চাপে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় নোটিশ জারি করে কলকাতা পুলিশ। ফলস্বরূপ অষ্টমীর রাত থেকে বন্ধ হয়ে যায় এই প্যান্ডেলের লাইভ অঘোরী নৃত্য। এই নৃত্যশৈলী ঘিরে মানুষের এত আকর্ষণ কেন?
অঘোরী কী?
অঘোরী হল হিন্দু ধর্মের সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের সদস্য। যারা ভগবান শিবের পুজো করেন। তারা আধ্যাত্মিক মুক্তি অর্জনের জন্য প্রচলিত সামাজিক নিয়মকানুনের বাইরে গিয়ে সাধনা করেন। কাপালিকদের থেকে উদ্ভূত এই তান্ত্রিক সাধকরা শ্মশান ভূমিতে বসবাস করেন। দেহে চিতাভস্ম মাখেন এবং মানব দেহাবশেষ দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস হিসেবে ব্যবহার করেন। যেমন খুলি, হাড়।
ত্রিধারাতে বন্ধ অঘোরী নাচ
কলকাতা পুলিশের দেওয়া নোটিশে বলা হয়, পুজো চলাকালীন অঘোরী নাচের কারণে ভিড় আরও বাড়ছে এবং মানুষের যাতায়াতে বাধা তৈরি হচ্ছে। ফলে কোনও দুর্ঘটনার আশঙ্কা একেবারে এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। মানুষের নিরাপত্তার কারণেই এই নাচ বন্ধ করা আবশ্যক। মানুষের সুরক্ষার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে, কমিটির উদ্যোক্তারা মণ্ডপের অঘোরী নাচ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। অষ্টমীতেই বন্ধ হয়ে যায় ত্রিধারার অঘোরী নাচ। নবমী এবং দশমীতেও হবে না লাইভ পারফর্ম্যান্স।