পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। জেলায় জেলায় অশান্তির খবরও মিলছে। এর মধ্যেই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বায়রনের দলবদলের ঘটনা স্মরণ করিয়ে কুণালের মন্তব্য,পঞ্চায়েতে অন্য চিহ্নে ভোট দিলেও তৃণমূলে চলে আসবে। যা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, রাজ্যে গণতন্ত্র রাখতে চাইছে না তৃণমূল। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই তাদের লক্ষ্য।
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে বিরোধীরা। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিও করেছে। এ দিন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,'সব জায়গাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে তৃণমূল। দু-চারজন অন্য প্রতীকে জেতেন তাঁদের বায়রনের অনুভূতি সংক্রমিত হবে। আর মানুষই কেন অন্য চিহ্নে ভোট দেবে? তৃণমূলে দিলে সরাসরি তৃণমূল জিতবে। অন্য চিহ্নে দিলেও ভোটের পরে জয়ীরা তৃণমূলে আসবে। ফলে অন্য চিহ্নে দিয়ে কী লাভ?'
তিন মাস আগে সাগরদিঘিতে জিতেছিলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। সাগরদিঘি বাম-কংগ্রেসের মরা গাঙে জোয়ার এনেছিল। সেই বায়রনই সদ্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। পঞ্চায়েতে বিরোধী হিসেবে জেতা প্রার্থীরাও তেমনটাই করবেন বলে দাবি কুণালের। তাঁর কথায়,'আমরা চাইছি পুরোদস্তুর প্রতিযোগিতা। এরা যে এত মারামারি করছে এরা তো অর্ধেক জায়গায় প্রার্থী খুঁজে পাবে না। আর যদি কোনও প্রার্থী জেতেন তাহলে তিনি এই সিস্টেমটার মধ্যে আরও ভাল করে কাজ করার জন্য তখন তিনি বুঝতে পারবেন কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে বঞ্চনা করছে, আর মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে সব স্কিমগুলো চালু রেখেছেন। ফলে এরা যদি পরিশ্রম করে, এত লম্ফঝম্ফ করে কোনও প্রার্থীকে জেতায়ও তিনি মনের টানে তারপর তৃণমূলে যোগ দেবেন'।
দল ভাঙানোয় কি প্ররোচনা দিচ্ছেন না? কুণালের দাবি, তাঁরা স্বেচ্ছায় তৃণমূলে আসবেন। এতে দল ভাঙানোর কোনও প্রশ্ন নেই।
দলবদলের পর বায়রন দাবি করেছিলেন, বিরোধী দলে থেকে এলাকার উন্নয়ন করতে পারছিলেন না। তাই শাসক দলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত। তাঁকে বেইমান বলে কটাক্ষ করেছিল কংগ্রেস। সেনিয়ে বায়রন বলেছিলেন,'আমি যে জিতেছি তাতে কংগ্রেসের কোনও অবদান ছিল না। আমি তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। টিকিট পাইনি বলে কংগ্রেসে যাই। বরাবরই আমি তৃণমূলের লোক। আমি যদি বিশ্বাসঘাতকতা করি, সেই জবাব দেবেন জনগণ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনে তৃণমূলের টিকিটে আরও বেশি ভোটে জিতব। বিজেপিকে রুখতে গেলে একমাত্র মঞ্চ তৃণমূল।'