বিচিত্রবীর্য! আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদী সিনিয়র ডাক্তারকে এই নামেই কটাক্ষ করছে তৃণমূল। সেই সিনিয়র ডাক্তার হলেন সুবর্ণ গোস্বামী। বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানের ডেপুটি সিএমওএইচ। কেন এহেন 'বিচিত্র' নাম? এর পিছনে রয়েছে সূবর্ণরই একটি দাবি।
সূবর্ণ গোস্বামীর নাম কেন বিচিত্রবীর্য দেওয়া হল? এই সূবর্ণ গোস্বামী দাবি করেছিলেন,'আরজি করের নির্যাতিতার যোনির মধ্যে ১৫০ গ্রাম বীর্য বা স্পার্ম মিলেছে। ধর্ষণ নয় গণধর্ষণ করা হয়েছে নির্যাতিতাকে'। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং পরবর্তীকালে সিবিআই চার্জশিট থেকে স্পষ্ট, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ই একমাত্র দোষী। অর্থাৎ তরুণী ডাক্তারকে গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি।
একজন পুরুষের বীর্য কতটা হতে পারে?
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, স্বাভাবিক পুরুষের একবার বীর্যপাত হলে বীর্যের পরিমাণ হতে পারে ১.৫ মিলিগ্রাম থেকে ৫ মিলিগ্রাম। প্রতি মিলিলিটারে ১.৫ কোটি থেকে ২০ কোটি পর্যন্ত শুক্রাণু থাকতে পারে।
সূবর্ণর ব্যাখ্যা
সংবাদ মাধ্যমে নিজের ১৫০ গ্রাম বীর্য-মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন সূবর্ণ। তাঁর বক্তব্য,'১৫০ গ্রাম বীর্যের কথা বলিনি। নির্দিষ্ট করে বললে ১৫১ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে তরল সাদা চটচটে পদার্থ ছিল। যেটা- হোয়াইট ভিসিড ফ্লুইড। তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হলে বীর্য থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তখনই বোঝা যাবে, এটা গণধর্ষণ কিনা!'
আরজি কর-কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম সূবর্ণ গোস্বামী। কখনও জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন মঞ্চ কখনও আবার মিছিলে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিভিন্ন সময় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন সূবর্ণ। তাঁকে পাল্টা আক্রমণে নেমেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি কটাক্ষ করেছেন,'বিচিত্রবীর্য গোস্বামীর সহকর্মীদের শ্লোগান: তোমার আমার একই নাম, দেড়শো গ্রাম, দেড়শো গ্রাম'।
বিচিত্রবীর্য গোস্বামীর
সহকর্মীদের শ্লোগান:
তোমার আমার একই নাম,
দেড়শো গ্রাম, দেড়শো গ্রাম।— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 18, 2024Advertisement
সূবর্ণ গোস্বামী কীভাবে বর্ধমান থেকে কলকাতায় এসে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন, উঠেছে সেই প্রশ্নও। সূবর্ণের দাবি,'আমি নিজের পেশা বজায় রেখেই কাজ করছি। সন্ধেয় আন্দোলনে যোগ দিচ্ছি'।
মহাভারতের বিচিত্রবীর্য
রাজশেখর বসুর মহাভারত অনুযায়ী, রাজা শান্তনু ও সত্যবতীর জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন চিত্রাঙ্গদ আর কনিষ্ঠপুত্র বিচিত্রবীর্য। বিচিত্রবীর্যের অর্থ বিরল শক্তির অধিকারী। যুদ্ধে চিত্রাঙ্গদের মৃত্যু হলে হস্তিনাপুরের ক্ষমতায় বসেন বিচিত্রবীর্য। কারণ ভীষ্ম সিংহাসন গ্রহণ না করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। বিয়ের ৭বছর পর বিচিত্রবীর্য যক্ষ্মায় মারা যান।