scorecardresearch
 

রাজ্যের নাম বদল ফের শিরোনামে! কেন 'বাংলা' নাম রাখতে মরিয়া মমতা?

দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের উপর নজর রয়েছে সব মহলের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই দিল্লি যাত্রাতেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উঠে এসেছে। সেটি হল রাজ্যের নাম বদল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবারই প্রথম নয়। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করতে সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল।

Advertisement
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • রাজ্যের নাম বদল ফের শিরোনামে
  • কেন 'বাংলা' নাম রাখতে মরিয়া মমতা?
  • জানুন বিস্তারিত তথ্য

দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের উপর নজর রয়েছে সব মহলের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই দিল্লি যাত্রাতেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উঠে এসেছে। সেটি হল রাজ্যের নাম বদল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবারই প্রথম নয়। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করতে সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল।

কেন এই উদ্যোগ ?

বাম আমলে একবার পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা বেশি দূর এগোয়নি। ২০১১ সালে প্রথমবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় এই বিষয়টি ওতোটা গতি পায়নি। ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে মন্ত্রিসভায় রাজ্যের নামবদলের প্রস্তাব পাশ হয়। তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের জন্য সক্রিয় হন তিনি। নাম পরিবর্তনের জন্য সরকার পক্ষের দাবি ছিল, ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী ওয়েস্টবেঙ্গলের (West Bengal) ডব্লিই অক্ষর (W) শেষের দিকে থাকে। কেন্দ্রীয় কিংবা আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও বৈঠকে বলার সুযোগ দেওয়া হয় ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী। সেক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কিংবা কোনও প্রতিনিধি বা মন্ত্রী বলার সুযোগ পান সবার শেষেই। ফলে সেই সময় একদম কম থাকে কিংবা লম্বা চলা বৈঠকে শেষের জনের বক্তব্য শোনার ধৈর্য্যই থাকে না অনেকের মধ্যে। ২০১৬ সালে এক কেন্দ্রীয় বৈঠকে একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সময়ে দিল্লি থেকে ফিরে রাজ্যের নামবদলের জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য

এ বিষয়ে ২০১৮ সালে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানান, "স্বাধীনতার পর থেকে দেশের বেশ কিছু রাজ্য ও শহরের নাম পরিবর্তন হয়েছে। যেমন ওড়িষ্যা (Orissa) থেকে ওড়িশা (Odisha), পন্ডিচেরি থেকে পুদুচেরি, মাদ্রাজ থেকে চেন্নাই, বোম্বাই থেকে মুম্বই, ব্যাঙ্গালোর থেকে বেঙ্গালুরু ইত্যাদি। স্থানীয় ও রাজ্যের ভাষার গুরুত্ব রেখেই এটা করা হয়েছে। আমাদের বিধানসভা মাতৃভাষায় স্থানীয় ভাবাবেগের উপর জোর দিয়ে রাজ্যের নাম বাংলা করার প্রস্তাব পাশ করেছে। বাংলায় ভাষায় রাজ্যের নাম রাখা হবে বাংলা, ইংরাজিতে রাখা হবে বেঙ্গল এবং হিন্দিতে রাখা হবে বাঙ্গাল। এমনই প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। সেই প্রস্তাব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠানো হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তিনটি নামের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলা নামই ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছিল। ফলে রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যের নাম পরিবর্তনের জন্য বাংলা নামের পক্ষে ফের প্রস্তাব পাশ হায়। সেটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে আবার পাঠানো হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কোনও উত্তর আসেনি। এতে স্পষ্টভাবে বাংলার মানুষের প্রতি বঞ্চনা দেখা যাচ্ছে । নামের মিল থাকলে সেটা সমস্যা না হওয়ারই কথা। কারণ আমাদের দেশেও একটি রাজ্যের নাম পঞ্জাব, অপরদিকে পড়শি দেশেও পঞ্জাব বলে একটি রাজ্য রয়েছে।"

Advertisement

ফের সক্রিয় মমতা

এবার তৃতীয়বার কুর্সিতে বসেই ফের রাজ্যের নামবদল ইস্যুতে সক্রিয় হলেন মমতা। দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে সেই ইস্যুটিও উঠে এসেছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্যের শাসকদলের এই তৎপরতায় বিরোধিতা করেছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য গতকাল রাজ্যের নামবদলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। যদিও এর আগেও যখন এই ইস্যুটি উঠেছিল, তখনও এর বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। এখন দেখার রাজ্যের নামবদলের ইস্যুটি কতদূর যায়। 

Advertisement