আবহাওয়ার খবর পৌষ মাস পড়তে আর হাতে গোনা একটা দিন মোটে। অথচ এক ধাক্কায় তাপমাত্রা বেড়েছে শহরের। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও ডিসেম্বরের শুরুতে শীত যা খেল দেখিয়েছে, মাসের মাঝামাঝি এসে সেই কনকনে ভাব কিছু হলেও উধাও। মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তর–পশ্চিম ভারতে তৈরি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্যই ঠান্ডা ও শুকনো বাতাসের প্রবাহ সাময়িক ভাবে থমকে গিয়েছে। তার ফলেই মধ্য ও পূর্ব ভারতের রাতের তাপমাত্রা আর কমছে না। যদিও মঙ্গলবার ভোর থেকেই জেলায় জেলায় জারি করা হয়েছে কুয়াশার সতর্কবার্তা। এর জেরে দৃশ্যমানতা কমেছে।
আগামী ৭ দিন কেমন থাকবে আবহাওয়া?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৭ দিন আবহাওয়ার তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না। সকালের দিকে কুয়াশার দাপট বাড়বে, কমবে দৃশ্যমানতা। রাজ্যবাসীকে সে কারণেই অ্যালার্ট করেছে হাওয়া অফিস। কুয়াশার অধিক দাপট থাকবে পশ্চিমের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ সংলগ্ন এলাকায়।
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার কিছু এলাকায় হাল্কা থেকে মাঝারি কুয়াশার প্রভাব রয়েছে। তবে মোটের উপর আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কোনও বড়সড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে না। তবে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কমই থাকবে।
কোথায় কত তাপমাত্রা?
সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ০.১ ডিগ্রি বেশি। এমনকী সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল মহানগরে। মঙ্গলবারও কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশেই থাকবে। সোমবার দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল শ্রীনিকেতনে, ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মেদিনীপুরে ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দিঘায় ১৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, উলুবেরিয়ায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ডায়মন্ড হারবারে ১৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাঁকুড়ায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বহরমপুরে ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও বর্ধমানে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আসানসোলে ১৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, পানাগড়ে ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে দার্জিলিঙে ৬.৪, কোচবিহারে ৯.১, জলপাইগুড়িতে ১০.৮, আলিপুরদুয়ারে ৯, কালিম্পঙে ১০.৫ ডিগ্রি ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। উত্তরবঙ্গে দৃশ্যমানতা ৯৯৯ মিটার থেকে ২০০ মিটার পর্যন্ত নামতে পারে। সোমবার সকালে কুয়াশার দাপটে দার্জিলিং থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অস্পষ্ট দেখা গিয়েছিল। যদি বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বরফে ঢাকা রৌদ্রজ্জ্বল শৃঙ্গ ধরা দিয়েছে পর্যটকদের ক্যামেরায়।
কেন অধরা শীত?
IMD জানিয়েছে, দিনের বেলা সম্পূর্ণ বিপরীত দিক অর্থাৎ দক্ষিণ–পূর্ব দিক থেকে ঢুকছে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস। অপেক্ষাকৃত কমজোর উত্তুরে হাওয়া ওই পুবালি বাতাস আটকাতে পারছে না। তাই দক্ষিণবঙ্গের জেলায় দেলায় শীতের আমেজ অধরা। আগামী সপ্তাহ খানেক এমনটাই চলবে। এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব পুরোপুরি কাটলে তবেই পড়বে জাঁকিয়ে শীত।