ডায়াবেটিসে কতটা অ্যালকোহলডায়াবেটিস একটি লাইফস্টাইল ডিজিজ। এই রোগের ফাঁদে পড়লে একাধিক খাবার ও পানীয়ের থেকে দূরত্ব তৈরি করতে হয়। নইলে শরীরের হাল দ্রুত বিগড়ে যেতে পারে। খারাপ হতে পারে কিডনি, চোখ, হার্টের মতো অঙ্গ। তাই মধুমেহ নিয়ে সাবধান হতে বলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু প্রশ্ন হল, ডায়াবেটিস থাকলে কি একদমই মদ বাদ, নাকি অল্পসল্প খাওয়া যেতেও পারে? আর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের আগে আমাদের সেই উত্তরটাই দিলেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ রুদ্রজিৎ পাল।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ নিয়ে সাবধান হন
আসলে ভারতের একটা বড় অংশের ডায়াবেটিস রোগী জানেনই না যে তাঁদের রোগটা রয়েছে। আর সেটাই বিপদ বাড়ায়। অজান্তেই মদ থেকে শুরু করে একাধিক পানীয় তাঁরা পান করে যান। যার ফলে শরীরের হাল বিগড়ে যেতে সময় লাগে না। তাই ডাঃ পাল সবার আগে ডায়াবেটিস রোগটাকে ধরে ফেলার পরামর্শ দিলেন।
তাঁর কথায়, 'ডায়াবেটিস রোগীদের একটা বড় অংশের শরীরে কোনও লক্ষণই দেখা যায় না। এক্ষেত্রে নিয়মিত টেস্ট করলেই অসুখটা ধরা পড়তে পারে। তবে কিছু কিছু মানুষের শরীরে উপসর্গ দেখা দেয়। আর সেগুলি হল- বারবার প্রস্রাব পাওয়া, ক্লান্তি, হঠাৎ রোগা হয়ে যাওয়া, কোনও ইনফেকশন সারতে না চাওয়া ইত্যাদি। তাই এমন কিছু উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই সাবধান হয়ে টেস্ট করাতে হবে। তারপর রোগ ধরা পড়লে খেতে হবে ওষুধ। পাশাপাশি জীবনযাত্রাতেও বদল আনা জরুরি। '
ডায়াবেটিসে একদম মদ বন্ধ?
এই প্রশ্নের উত্তরে ডাঃ পাল বলেন, 'অনেক ডায়াবেটিস রোগীই মদ খান। তবে সেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। আসলে মদ সরাসরি সুগার বাড়ায় না। কিন্তু প্রেশার, কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যাকে বৃদ্ধি করতে পারে। যার ফলে সুগার রোগীর শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি মদ খেলে ক্যানসারও হতে পারে। তাই এই পানীয়ের নেশা ছেড়ে দেওয়াই ভাল। তবে কেউ যদি একান্তই খেতে চান, তাহলে সপ্তাহে পুরুষেরা দুই ইউনিট (দুই পেগ) এবং মহিলারা ১ ইউনিট (১ পেগ) মদ খেতে পারেন। তাতে খুব বড় বিপদের আশঙ্কা থাকবে কম।'
মদের মতোই চাট খারাপ
অনেকেই মদের সঙ্গে একাধিক ফাস্ট ফুড খান। আর এই ধরনের খাবার শরীরের ক্ষতি করে দিতে পারে। বাড়াতে পারে কোলেস্টেরল। তাই সাবধান হতে হবে। চেষ্টা করতে হবে এই ধরনের চাট এড়িয়ে চলার। তার বদলে লো ক্যালোরি খাবার চাট হিসাবে খেতে পারেন। তাতে সমস্যার আশঙ্কা থাকবে কম।
নিয়মিত সুগার মাপুন
ডায়াবেটিস রোগীদের এমনিতেই নিয়মিত সুগার মাপা উচিত। তার উপর যদি মদ খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে তো আরও বেশি করে মাপতে হবে। মাসে অন্তত একবার সুগার টেস্ট মাস্ট। তাতেই সমস্যাকে কাবু করে ফেলতে পারবেন।
বিদ্র: এই প্রতিবেদটি সচেতনতার উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছে। কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।