ব্রিটেন সফরে গিয়ে এক সকালে কসরতের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায় পিছন দিকে হাঁটতে। তাঁর সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন সাংবাদিক ও নিরাপত্তারক্ষীরাও। এই দৃশ্য দেখে অনেকেই অবাক হলেও, বাস্তবে পিছন দিকে হাঁটা কিন্তু শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী একটি ব্যায়াম। এটি শুধুমাত্র শরীরের কিছু বিশেষ অংশকে শক্তিশালী করে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
১. হাঁটুর জোর বাড়ে
কোটিপতি ব্রায়ান জনসনের নাম অনেকেই শুনেছেন। শতবর্ষেরও বেশি জীবিত থাকার লক্ষ্য নিয়েছেন তিনি। এর জন্য তিনি নানা চিকিৎসা ও আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। তাঁর রোজকার রুটিনে রয়েছে ‘ব্যাকওয়ার্ড ওয়াকিং’ বা পিছন দিকে হাঁটার অভ্যাস। এক ইউটিউব ভিডিওতে তিনি জানিয়েছেন, পিছন দিকে হাঁটা হাঁটুর পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এটি বৃদ্ধ বয়সে হাঁটু দুর্বল হয়ে পড়া বা ব্যথা হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
২. ব্যালেন্স ও পেশির জোর বাড়ে
পিছন দিকে হাঁটলে আমাদের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে হয় ভিন্নভাবে। এতে শরীরের কো-অর্ডিনেশন বা সমন্বয় ক্ষমতা উন্নত হয়। বিশেষ করে পায়ের পেশিগুলি অনেক বেশি সক্রিয় থাকে। ফলে পায়ের পেশি, হিপ ও কোমরের পেশি শক্তিশালী হয়। অ্যাথলেটদের ট্রেনিং-এও এই ব্যায়াম রাখা হয়।
৩. ক্যালোরি বার্ন
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিক হাঁটার তুলনায় পিছন দিকে হাঁটা ৩০ শতাংশ বেশি ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। ফলে যারা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য এই ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকর।
৪. মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে
পিছন দিকে হাঁটার সময় মস্তিষ্ককে বেশ সক্রিয় থাকতে হয়, কারণ এটি আমাদের স্বাভাবিক হাঁটার বিপরীত একটি কাজ। ফলে মস্তিষ্কের স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়ে, রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় এবং স্মৃতিশক্তিও উন্নত হয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
৫. মন ভালো থাকে
এই ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। একঘেয়ে ও রুটিন কাজ থেকে একটু ভিন্ন কিছু করার অভিজ্ঞতা মনকে চাঙ্গা করে তোলে। বিশেষ করে সকালে খোলা হাওয়ায় এইভাবে হাঁটলে মন ভালো থাকে, মুড ফ্রেশ হয়।
কীভাবে শুরু করবেন?
প্রথমে একটি ফাঁকা জায়গায় খুব ধীরে পিছন দিকে হাঁটা শুরু করুন।
পাশে কেউ থাকলে ভাল, কারণ হঠাৎ কিছু থাকলে ধাক্কা লাগতে পারে।
৫ মিনিট করে শুরু করে ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে পারেন।
যাঁদের ভারসাম্য বজায় রাখতে অসুবিধা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে পিছন দিকে হাঁটার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পিছন দিকে হাঁটা শুধু মুখ্যমন্ত্রীর শরীরচর্চার অভ্যাস নয়, এটি এখন এক বৈজ্ঞানিক ব্যায়াম। আপনি যদি হাঁটুর সমস্যা, মানসিক চাপ বা ওজন কমানো নিয়ে চিন্তায় থাকেন, তাহলে আজ থেকেই দিনে ৫ মিনিট পিছন দিকে হাঁটা শুরু করুন।