নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা NAFLD এখন ভারতে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব সব মিলিয়ে এই রোগের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। লিভারে অল্প পরিমাণে ফ্যাট থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু অতিরিক্ত ফ্যাট জমে গেলে তা লিভারের কার্যক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করালে এই সমস্যা সিরোসিস বা এমনকি লিভার ক্যানসার পর্যন্ত গড়াতে পারে।
ফ্যাটি লিভার সাধারণত দুই প্রকারের হয়,
1. অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার, যা অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে হয়।
2. নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার, যা অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, জাঙ্ক ফুড খাওয়া, ও অনিয়মিত জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত।
যদিও এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত কোনও লক্ষণ থাকে না, তবে ধীরে ধীরে কিছু সতর্ক সংকেত দেখা দেয়
পেটের ডান পাশে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি, অতিরিক্ত ক্লান্তি, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। আর যখন রোগটি গুরুতর আকার ধারণ করে, তখন দেখা দিতে পারে পেটে ও পায়ে ফোলাভাব, ত্বক ও চোখের হলুদভাব (জন্ডিস), গাঢ় প্রস্রাব, হালকা রঙের মল এবং মানসিক বিভ্রান্তি।
পায়ে ফোলাভাব: বিপদের আগাম ইঙ্গিত
ব্রিটেনের NHS এর রিপোর্ট বলছে, পায়ে ফোলাভাব বা Pedal Edema ও ফ্যাটি লিভারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই এটি অবহেলা করেন, ভেবে নেন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা হাঁটার কারণে ফোলেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি লিভারের সমস্যার আগাম সতর্কতা হতে পারে।
এই ফোলাভাব শনাক্ত করতে, যেখানে ফোলেছে সেখানে কয়েক সেকেন্ড আঙুল দিয়ে চাপ দিন। যদি আঙুল সরানোর পরেও জায়গাটিতে গর্তের মতো দাগ থাকে, সেটিই Pitting Edema নামে পরিচিত যা শরীরে তরল জমে থাকার কারণে হয়।
দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করুন
পায়ে ফোলাভাব দেখা দিলে অবহেলা করবেন না। এটি লিভারের ক্ষতির প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। সময়মতো পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা শুরু করলে লিভার সম্পূর্ণভাবে সুস্থ রাখা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, নিয়মিত শরীরচর্চা, সুষম খাদ্যাভ্যাস, অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাই ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।