
বর্তমান সময়ে অনিয়মিত খাবারদাবি, অতিরিক্ত তেল-মশলা আর অলস জীবনযাপনের কারণে ফ্যাটি লিভার আজ ঘরে ঘরে সাধারণ রোগের মত ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে লিভারে চর্বি জমে থাকলে তা কেবল বিপজ্জনকই নয়, ধীরে ধীরে মারাত্মক জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, অবহেলা করলে এই সমস্যা লিভার ড্যামেজ পর্যন্ত গড়াতে পারে।
ফ্যাটি লিভার আসলে লিভারের কোষে অস্বাভাবিক মাত্রায় চর্বি জমার সমস্যা। এটি সাধারণত দুই ধরনের নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার এবং অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এই অবস্থাই পরবর্তীতে লিভার সিরোসিস, লিভারের ক্যানসার কিংবা লিভার ফেলিয়র পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তাই প্রাথমিক স্তরেই প্রতিরোধ খুবই জরুরি।
লিভারকে সুস্থ রাখতে সঠিক ডায়েট ও শারীরিক পরিশ্রম তো আছেই, পাশাপাশি কিছু প্রাকৃতিক উপাদানও দারুণ কাজ করে। এগুলো লিভারের উপর জমে থাকা টক্সিক পদার্থ দূর করে, কোষের প্রদাহ কমায় এবং সামগ্রিকভাবে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সাধারণ উপাদানগুলো দৈনন্দিন অভ্যাসে রাখলেই লিভারের স্বাস্থ্য অনেকটাই ভাল থাকে।
হলুদের গুণ
হলুদের মধ্যে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কারকিউমিন লিভারকে নানা ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এটি প্রদাহ কমায়, চর্বি জমা প্রতিরোধ করে এবং লিভারের ডিটক্সিফিকেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। হলুদ দুধ, উষ্ণ জল অথবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায়।
জোয়ান
জোয়ান লিভারের পাশাপাশি হজমের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত উপকারী। এটি লিভারে জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। ফলে লিভার হালকা থাকে এবং ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ অনেকটাই কমে যায়। নিয়মিত অজওয়াইনের জল খাওয়া উপকারী।
আমলকি
ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর আমলকি, লিভারের কোষকে পুনর্জীবিত করতে সাহায্য করে। লিভার পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত কার্যকর। আমলকি জুস, গুঁড়ো বা কাঁচা যে কোনও উপায়ে খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে খেলে লিভারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
সব মিলিয়ে নিজের রোজকার অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আর কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার লিভারের স্বাস্থ্যে বড়সড় উন্নতি আনতে পারে। ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমাতে আজ থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।