ভারতে প্রতিদিন বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঘটনা। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নন, শিশু ও যুবকেরাও এখন এর শিকার হচ্ছে। সম্প্রতি রাজস্থানের সিকারে ৯ বছরের এক বালিকা এবং কর্নাটকের হাসান জেলায় একদিনে চারজনের হঠাৎ মৃত্যু হৃদরোগ নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
হার্ট অ্যাটাকের নির্দিষ্ট সময় আছে কি?
হার্ট অ্যাটাক যেকোনও সময় হতে পারে। তবে গবেষণা বলছে দিনের কিছু সময় ও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ঝুঁকি বেশি।
ভোরবেলা (৪টা – ৮টা): ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার মাহি এক ভিডিওতে জানান, ভোরবেলায় কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) বাড়ে, ঘুম থেকে ওঠার চাপ এবং হঠাৎ সক্রিয় হওয়ার কারণে রক্তচাপও বেড়ে যায়। এই সময় শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকে, ফলে রক্ত ঘন হয় এবং ধমনিতে জমাট বাঁধার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
সোমবার: আয়ারল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অফ সার্জনস-এর গবেষণায় দেখা গেছে, সোমবার গুরুতর হার্ট অ্যাটাক (STEMI) হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ১৩% বেশি। সপ্তাহান্তের বিশ্রামের পর কাজের চাপ এই ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়।
শীতকাল: ভারতে শীতকালে হার্ট অ্যাটাক ৩৩% বেড়ে যায়। ঠান্ডা হাওয়ায় রক্তনালী সঙ্কুচিত হয়, রক্তচাপ বাড়ে এবং শারীরিক কার্যকলাপ কম হয়, ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
উৎসবের দিনগুলো: বড়দিন ও নববর্ষের সময়ও হার্ট অ্যাটাক বেড়ে যায়। মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং দেরিতে চিকিৎসা পাওয়ার কারণে এ সময়ে ঝুঁকি বাড়ে।
জৈবিক ঘড়ির প্রভাব
লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা জানাচ্ছে, সকালে রক্তে কিছু প্রতিরক্ষামূলক অণুর মাত্রা কম থাকে। ফলে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞের মত
মুম্বাইয়ের গ্লেনিগেলস হাসপাতালের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ স্বরূপ স্বরাজ পাল বলেন, 'ভোর ৩টে থেকে ৬টা সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়। এ সময় কর্টিসলের মাত্রা বেশি থাকে, রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হৃদপিণ্ডকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। যাদের ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ বা স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি।'
তিনি আরও জানান, শুধু ঘুমানোর আগে অল্প জল খেলেই হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করা যায় না, তবে শরীর হাইড্রেটেড রাখা অবশ্যই সহায়ক।